
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: নাবালক সন্তানদের সম্পত্তি আত্মসাৎকারী আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী গং কর্তৃক মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে আজ ২৬ আগস্ট (শনিবার) সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসব্রিফিংয়ে শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী জানান, মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরী আমার স্বামী। পক্ষান্তরে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী, ১ম সংসারের সন্তান। গত ১১/০৪/২০১২ইং সালে ওয়াহেদ আজগর চৌধুরী হঠাৎ মৃত্যুবরণ করলেন ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর সহায় সম্পত্তি ও টাকা নিয়ে আমার সাথে উক্ত আহমেদ ফয়সাল চৌধুরীর বিরোধ চলে আসছে।
উক্ত বিরোধের জের ধরে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী বিগত ১৬/০৮/২০২৩ইং তারিখে পাঁচলাইশ থানাধীন শামীমা ওয়াহেদ এর মাতা রিজিয়া বেগমের ব্যক্তি মালিকানাধীন রিজিয়া ম্যানশনে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে এবং আহমেদ ফয়সাল একটি বিদেশী শেফার্ড কুকুর নিয়ে উক্ত রিজিয়া ম্যানশনের ভবনের ভেতর অবস্থান করছেন। আমি উক্ত বিষয় পাঁচলাইশ থানায় অবগত করলেও উক্ত থানার ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন মজুমদার এস আই মোঃ জাকির আমাকে সহযোগিতা না করে এবং কোর্টের নিষেধাজ্ঞার আদেশকে অমান্য করে বেআইনিভাবে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরীকে রিজিয়া ম্যানশন ভবনের ভিতর অবস্থান করার জন্য সহযোগিতা করেন। বেআইনি কাজে প্রশ্রয় দিয়ে শামীমা ওয়াহেদের কাছে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এতে শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য বিগত ১৭/০৮/২০১৩ ইং তারিখে আহমেদ ফয়সালসহ পাঁচলাইশ থানার ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন মজুমদার এবং এস আই মোঃ জাকির এর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন আদালত, চট্টগ্রামে সি আর মামলা-৬১১/২০২৩ নং দায়ের করেন। বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ শুনানীঅন্তে সি আর মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য আদেশ প্রদান করেন। উক্ত মামলা দায়েরের পর বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে ইতিমধ্যে উক্ত আদেশের সংবাদ প্রচার করা হয়। আহমেদ ফয়সাল উক্ত মামলা সম্পর্কে অবগত হয়ে তার অন্যায় আচরণকে ধামা-চাপা দিতে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেন।
শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী আরো জানান, আমার স্বামী মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীসহ আরো তিন জন মিলে মেসার্স নুপূর এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড নামীয় একটি কোম্পানি গঠন করেন। যা নুপুর মার্কেট নামে পরিচিত। পরবর্তীতে ওয়াহেদ আজগর চৌধুরী মৃত্যুবরণ করলে তার ১ম সংসারের সন্তানগণ আহমদ ফয়সাল চৌধুরী, আহমদ রাসেল চৌধুরী ও ফারজিন চৌধুরী দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নুপুর মার্কেটের ভাড়ার লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। আমি দ্বিতীয়া স্ত্রী শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী এবং এক কন্যা সামিনা চৌধুরী ও এক পুত্র নাবালক আহমদ ফারহান চৌধুরী এবং মরহুমের প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা সকল স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তির একমাত্র ওয়ারিশ থাকি। মূলতঃ আহমেদ ফ্যাসাল উনার সৎ মা শামীমা ওয়াহেদ ও সৎ ভাইবোনের সম্পত্তি বেআইনিভাবে গ্রাস করার জন্য মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর দ্বিতীয়া স্ত্রী- সন্তানদের ওয়ারিশ নয় মর্মে বিভিন্ন অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। এমনকি আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী সম্পত্তি আত্মসাত করার উদ্দেশ্যে বিগত ১৯/০৩/২০১৩ ইং তারিখে ৩১ নং আলকরণ কাউন্সিলর অফিস থেকে প্রতারণামূলকভাবে ওয়ারিশান সনদপত্র তৈরী করেন এবং বিগত ১০/০৬/২০১৩ ইং তারিখে একই কাউন্সিলর উক্ত ১৯/০৩/২০১৩ইং তারিখের ওয়ারিশান সনদ মিথ্যা ও ভুল উল্লেখ করে একটি ঘোষণামূলক প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন।
শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী জানান, মূলতঃ সম্পত্তি আত্মসাৎ করা নিয়ে আহমদে ফয়সাল চৌধুরীসহ অন্যান্যদের সাথে শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরীর বিরোধ শুরু হয় এবং আমাকে মিথ্যাভাবে ফাসানো ও সামাজিকভাবে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যে আহমদে ফয়সাল চৌধুরী আমি শামীমা ওয়াহেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেওয়ানী- ফৌজদারী আদালতে মামলা মোকাদ্দমা দায়ের করেন যার মধ্যে ১ম সিনিয়র সহকারী জজ অপর মামলা নং ৫২/২০১৩ ও অপর মামলা নং ১৪৫/২০১২তে আহমদ ফয়সাল চৌধুরী, আহমদ রাসেল চৌধুরী ও ফারজিন চৌধুরীসহ ১৯/০৪/২০১২ইং তারিখের ২২নং এনায়েত বাজার কাউন্সিলর থেকে ওয়ারিশান সনদ উপস্থাপন করে শামীমা ওয়াহেদ সহ তার নাবালক সন্তানদের মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর ওয়ারিশ হিসেবে স্বীকার করে সোলেনামা দাখিলের মাধ্যমে বিগত ১৯/০৭/২০১৫ইং তারিখে সোলেসূত্রে রায় ও ডিক্রি হয়ে মামলা খারিজ হয়। এছাড়া ৩য় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে অপর মামলা নং ৩৪১/১৩ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বিগত ০৩/০৬/২০১৮ ইং তারিখে বিজ্ঞ ১ম যুগ্ম জেলা জজ কর্তৃক মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর ওয়ারিশদের বরাবর সাকসেশন সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয় ও গার্ডিয়ান শীপ মামলা নং- ৫১/২০১২ তে পাঁচ কোটি টাকা আহমদ ফয়সাল চৌধুরী, আহমদ রাসেল চৌধুরী ও ফারজিন চৌধুরী আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হামজারবাগ এলাকায় পাঁচলাইশ থানাধীন রিজিয়া ম্যানসনের বাড়িটি ছেড়ে দেওয়া বা ৫ পাঁচ কোটি টাকার চেক এবং পে-অর্ডারের মাধ্যমে আমি শামীমা ওয়াহেদ থেকে নিয়ে যায়। তাহা পরবর্তীতে অস্বীকার করলে মানি মামলা হিসাবে উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন আছে। আরো উল্লেখ্য যে, আহমদ ফয়সাল চৌধুরী কর্তৃক দায়েরী ফৌজদারী মামলা সিআর মামলা নং-১১৫০/২০১২, সি আর মামলা নং-২৫৮/২০১৩ মামলাসমূহে অভিযোগ সত্যতা পায় নাই মর্মে খারিজ হয়। এছাড়া বিজিয়া ম্যানশান সংক্রান্তে আহমদ ফয়সাল কর্তৃক দায়েরী কোম্পানি সংক্রান্তে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে কোম্পানি ম্যাটার নং-২৫৬/২০ বর্তমানে বিচারাধীন আছে। শামীমা ওয়াহেদ এবং তাঁর নাবালক সন্তানদের মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে সামাজিকভাবে হেনস্থা ও অপদস্ত করার উদ্দেশ্যে এ সমস্ত ঘৃণ্য কাজ করছেন আহমদ ফায়সাল চৌধুরী। আহমদ ফয়সাল চৌধুরীসহ অন্যান্য ব্যক্তিরা পরধন লোভী, আত্মসাতকারী, মামলাবাজ এবং জোড়-জুলুমবাজ স্বভাবের লোক হন। প্রতারণামূলকভাবে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে আসছেন সেই সংক্রান্তে তার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ পক্ষে ভাইস চ্যান্সেলর মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন নং- ১২৫৩৫/২০১৮ দায়ের করেন যা বিচারাধীন আছে। আমার স্বামী ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর মৃত্যুতে আমি ২ নাবালক সন্তান নিয়ে আজ অসহায় অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছি। আহমেদ ফয়সাল চৌধুরীর এসব অত্যাচার ও নির্যাতন দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী আমাকে তাহার পিতার স্ত্রী হিসেবে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে সোলেনামা দিয়ে আজ আমাকে গৃহহীন করার উদ্দেশ্য এসব মিথ্যাচার করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাশেদুল হাসান, রিজিয়া বেগম, সামিনা ওয়াহেদ চৌধুরী, আরশাদ উল্লাহ ও সাজ্জাদুল ইসলাম প্রমুখ।