
সাঈফী আনোয়ারুল আজীম: আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী। নজরুল আমাদের সাহসের বাতিঘর, অন্ধকার রজনীতে আলোর দ্যোতি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে চির বিদ্রোহী। তিনি সত্য উচ্চারণের নির্ভীক কণ্ঠস্বর। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াকু কলম সৈনিক।
নজরুল আজীবন অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে লড়াকু ছিলেন, বিশেষ করে তৎকালীন ব্রিটিশদের অন্যায় শাসনের বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদী ছিলেন। নজরুলের ক্ষুরধার লিখনি ব্রিটিশ মনসদকে কাঁপিয়ে তোলতো।
ব্রিটিশ আমলে হুগলি জেলে কারারুদ্ধ থাকাকালীন বন্দিদের মনে সাহস জোগানাের জন্য নজরুল রচনা করেছিলেন ‘শিকল-পরার গান’ কবিতাটি। পরবর্তী সময়ে এই গান হয়ে উঠেছিল অন্যায় শাসকদের বিরুদ্ধে কোটি মজলুম জনতার প্রতিবাদের ধ্বনি ।
আজও অত্যাচারী শাসক এবং অত্যাচারী শাসনের বিরুদ্ধে নজরুলের এই গান প্রতিবাদের মিছিলে কোটি মজলুমের বজ্রধ্বনি হয়ে ধ্বনিত হয়।
সেদিন ব্রিটিশ শাসক কর্তৃক নিরীহ জনতাকে কারারুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে নজরুল ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে লিখেছিলেন,
“তোমরা ভয় দেখিয়ে করছ শাসন
জয় দেখিয়ে নয়
সেই ভয়ের টুটি ধরবো চেপে
করবো তারই লয়”
নজরুল এখানে থেমে থাকেননি, তিনি লিখেছেন,
“মোরা ফাঁসি পরেই আনবো হাসি
মৃত্যু জয়ের গল,
এই শিকল পরা ছল
মোদের এই শিকল পরা ছল”
প্রতিটি দেশে, প্রতিটি শাসন রাজ্যে আজ নজরুলের মতো একজন কবির বড়ই প্রয়োজন। নজরুলের মতো কবিরা পারেন অত্যাচারীর মসনদকে নড়েবড়ে করে দিতে, মজলুম জনতার মুক্তির কাণ্ডারী হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে।
আজ দেশ এবং জাতি নজরুলের মতো একজন সাহসী কবির বড়ই শূণ্যতা অনুভব করছে। আজকের কোনো কবি সাহস নিয়ে অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে কলম ধরতে পারেনা, তাঁদের কলম শাসকের ‘উপঢৌকন’ পাওয়ার নেশায় মত্ত। তাই তো আজ ধ্বনিত হচ্ছে না,
” এই শিকল পরা ছল
মোদের এই শিকল পরা ছল
এই শিকল পরেই
শিকল তোদের করবো রে বিকল”
৪৭ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।