নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে আজকে মানুষ জেগে ওঠেছে। সারাদেশের মানুষ হারানো গণতন্ত্র ফিরে পেতে চায়। নিজের ভোট নিজে দিতে চায়। দেশের মানুষ আন্দোলন মূখী। আন্দোলন ছাড়া সফলতা অর্জন করা যায় না। একদফার আন্দোলনের জোয়ারে সরকার পালাবে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্তবর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। এছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
তিনি শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকালে কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে বিএনপির ৪৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির র্যালী পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আব্দুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে বিএনপির বর্ণাঢ্য র্যালীটি কাজীর দেউরি নুর আহমেদ সড়ক থেকে শুরু হয়ে লাভলেইন, জুবলি রোড হয়ে তিনপুলের মাথায় গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক এস এম সাইফুল আলমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
মানুষ বিএনপির কাছে অ্যাকশন চায় উল্লেখ করে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, মানুষ এখন বক্তৃতা শুনতে চায় না। মানুষ অ্যাকশন চায়। সেই অ্যাকশন জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বের কাছে চায়। আজকে মানুষ চায় আমার ভোট আমি দেবো, আমার ইচ্ছায় যাকে খুশি তাকে দেবো। এখানে অমুককে দেব, তমুককে দেব বলে কোনো কথা নেই।
জিয়াউর রহমান দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তনে নিষ্ঠা দেখিয়েছেন জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আজ এই সভা থেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে যে আমরা লড়াই করব। লড়াই করে বিএনপিকে আবার ক্ষমতায় আনব। আমাদের খতিয়ে দেখা উচিত জিয়াউর রহমানের সাথে মানুষের সম্পর্ক কি রকম ছিল। তিনি একজন মেজর ছিলেন। মেজর জিয়া দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির পরিবর্তনে যে নিষ্ঠা দেখিয়েছেন যে কারণে দেশের মানুষ আকাঙ্খায়িত হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল।
জনাব নোমান বলেন, তারুণ্যের যে উচ্ছ্বাস যে চেতনা সেটা এরশাদ সরকারকে দেখিয়ে দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। এই লড়াই বাঁচার লড়াই। এই লড়াইয়ে জিততে হবে। আমরা সেই লড়াইয়ে জিতেছি। এরশাদ পতন হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সবাই তখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। যিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। তিনি এমন সময় দেশের হাল ধরেন যখন তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলো। এর প্রেক্ষিতে বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেসময় দেশ একটি দলের হাতে চলে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান স্বল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরকে ছাঙ্গা করে অর্থনৈতিক যোগান দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান সরকার শহীদ জিয়ার সে অগ্রগতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ দেশে বিভেদের রাজনীতি শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বিষোদগার করে চলেছেন জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের বিরুদ্ধে। তারা শহীদ জিয়ার একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা নিয়েও হাস্যকর বক্তব্য দিচ্ছেন। এই কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, এরা কতটা প্রতিহিংসা পরায়ন। কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি যেদিন শাহাদতবরণ করেন সেদিন এদেশের লাখ লাখ মানুষ তার জন্য কেঁদেছিল। মানিক মিয়া এভিনিউতে লাখ লাখ মানুষের তার জানাজায় অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি যে কত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন সেটা প্রমাণিত হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ আজকে রাস্তায় নেমে গেছে। আমরা আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাবো। শেখ হাসিনার পতন হলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। তারেক রহমান বীরের বেশে দেশে ফিরে আসবে। দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছিল জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি গঠনের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান সেই সংকট দূর করতে সক্ষম হন। এ কারণেই বিএনপির বিরুদ্ধে বারবার ষড়যন্ত্র হয়েছে। সামরিক শাসক এরশাদ হুদা মতিনকে দিয়ে নতুন বিএনপি গঠন করেছিলেন। কিন্তু আজ সেই হুদা মতিনের বিএনপির কোনো অস্তিত্ব নেই। ওয়ান ইলেভেন সরকারও বিএনপিকে নির্মূল করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জনগণের প্রতিরোধের মুখে তারা সফল হয়নি।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এড. আবদুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, হাজী মো. আলী, মাহবুব আলম, এড মুফিজুল হক ভূঁইয়া, নিয়াজ মো. খান, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারন সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহার, মহানগর মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, চমেক ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো জসিম উদ্দিন, থানা বিএনপির সভাপতি মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, হাজী বাবুল হক, মো. আজম, হাজী মো. সালাউদ্দীন, মোশাররফ হোসেন ডেপটি, আবদুল্লাহ আল হারুন, ডা. নুরুল আবছার, এম আই চৌধুরী মামুন, থানা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাকির হোসেন, জাহিদ হাসান, হাজী বাদশা মিয়া, জসিম উদ্দিন জিয়া, মনির আহম্মেদ চৌধুরী, আবদুল কাদের জসিম, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, নুর হোসাইন, কেন্দ্রীয় জাসাসের সদস্য আমিনুল ইসলাম, জেলা ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, মহানগর কৃষকদলের আহবায়ক মো. আলমগীর, সদস্য সচিব কামাল পাশা নিজামী, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, তাঁতীদলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মুরাদ, মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক নুরুল হক, সদস্য সচিব এড. আবদুল আজিজ, জাসাসের আহবায়ক এম এ মুছা বাবলু, সদস্য সচিব মামুনুর রশীদ শিপন প্রমুখ।