নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বিএনপি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিরোধী সংগঠন আওয়ামী লীগের এমন অপপ্রচার এখন আর কেউ বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন অন্য সম্প্রদায়ের লোকজন নিরাপদে থাকেন। বরং বাংলাদেশের প্রতিটি সংখ্যালঘু হামলার সঙ্গে আওয়ামীলীগ জড়িত।
তিনি শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ বিএনপির কার্যালয়ে আসন্ন প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিবেশী দেশ ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে একটা অপপ্রচার চালায় যে, বাংলাদেশে বিএনপি হচ্ছে হিন্দুবিরোধী দল। কিন্তু বিএনপি হিন্দুবিরোধী এটা মানুষ বিশ্বাস করে না। কারণ বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপদ থাকে। ১৯৯১ সালে বিএনপির আমলে ভারতের রাম মন্দির, বাবরী মসজিদের ঘটনার সময়ে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিরাপত্তা বিধানে পদক্ষেপ নিয়েছিল বিএনপি। বরং বাংলাদেশের প্রতিটি সংখ্যালঘু হামলার সঙ্গে আওয়ামীলীগ জড়িত। হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি, দোকান-পাট, ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের লোকজনই দখল করেছে। বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন স্থানে মন্দিরে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, রামুতে বৌদ্ধ বিহারে অগ্নিসংযোগ হামলার ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত। উদ্দেশ্য একটাই, তাদের সম্পত্তিগুলো দখল করা, তাদেরকে বিতাড়িত করা এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে তাদেরকে হেয়ৎুতিপন্ন করা। এটা এখন আর মানুষ বিশ্বাস করে না, গ্রহণ করে না। অনেকটা রাখাল বালকের মতো হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বিএনপির ভিশন ২০৩০ এবং যে ৩১ দফা দিয়েছে, সেখানে সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি আছে। দেশে গণতন্ত্র থাকলে সেটা থাকবে। একমাত্র সুরক্ষা হচ্ছে গণতন্ত্র। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার রক্ষা শুধু বিএনপির আন্দোলন নয়। এটা পুরো জাতির লড়াই। এ লড়াইয়ে জয়ী হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বর্তমান সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার জন্য কাজ করছে। মানুষের ন্যূনতম অধিকারগুলোও তারা কেড়ে নিচ্ছে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনও গৃহবন্দি। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কেউ না। কখন কাকে মিথ্যা মামলা জড়িয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করে রাখবে তা বলা যায় না। প্রতিপক্ষকে মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে নির্বাচনের খেলা খেলতে চায় সরকার। তবে এবার সেই খেলা খেলতে পারবে না।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক উপজাতি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ঝন্টু কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী দিপু বড়ুয়ার পরিচালনায় সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ট্রাস্টি বাবু চন্দ্রগুপ্ত বড়–য়া, মহানগর বিএনপির সদস্য কামরুল ইসলাম, সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলম, খাগড়াছড়ি জেলা কৃষক দলের সভাপতি পারদর্শী বড়–য়া, রাঙ্গামাটি জেলা কৃষক দলের সভাপতি অলক বড়–য়া রিন্টু, বান্দরবন সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব চনু মং মারমা, বান্দরবন জেলা কৃষক দলের সভাপতি অংজ মারমা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব ধর তমাল, চকবাজার থানা বিএনপির সাধারণ সমস্পাদক নুর হোসাইন। বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন কমল জ্যোতি বড়–য়া, সাচিং মারমা, সুজন বড়–য়া, বিনয় চাকমা, তিলক বড়–য়া, সজল বড়–য়া, পলাশ মারমা, উক্রাচিং মারমা, মোহন বড়–য়া, তন্ময় বড়–য়া প্রমুখ।