চট্টগ্রামে পৈত্রিক হিস্যা আত্মসাতের অপতৎপরতার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: পৈত্রিক জমি উদ্ধারের দাবিতে ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ভূক্তভোগী ও অসহায় পরিবার। বৈমাত্রেয় বোন সামছী ক্বমর চৌধুরীর পৈত্রিক হিস্যা আত্মসাতে শাহারিয়ার ইবনে দিদার গংয়ের অপতৎপরতায় প্রতিবাদে আজ ১৫ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষে ড. মোহাম্মদ আরশাদ উল আলম তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার নানা দিদারুল আলম ৩১ বছর আগে মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি আমার মা সামছী ক্বমর চৌধুরী সহ আমাদের ৫ ভাই ও ২ বোন রেখে যান।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগি পরিবারের পক্ষে ড. মোহাম্মদ আরশাদ-উল আলম লিখিত বক্তব্যে বলেন, চট্টগ্রামের দেওয়ানবাজার দিদার মার্কেটের স্বত্বাধিকারী ও প্রতিষ্ঠাতা মরহুম দিদারুল আলম চৌধুরীর প্রথম স্ত্রীর একমাত্র সন্তান সামছী ক্বমর চৌধুরীর ন্যায্য পৈত্রিক হিস্যা বৈমাত্রেয় ভাইদের (শাহরিয়ার ইবনে দিদার, মৃত শাহনেওয়াজ ইবনে দিদারের পরিবারবর্গ, শাহজাদ ইবনে দিদার) তারা আত্মসাতের বিভিন্ন অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।
১৯৯২ সনে দিদারুল আলম চৌধুরীর ইন্তেকালের পর তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানগণ তাদের অগ্রজ একমাত্র বৈমাত্রেয় বোন সামছী ক্বমর চৌধুরীকে অস্বীকার করে। আত্মীয়তার সম্পর্ক অস্বীকার করে, সম্পত্তির হিস্যা দিতে অস্বীকার করে। সেমতে একটি স্থানীয় দৈনিক ও একটি জাতীয় দৈনিকে প্রেরিত শোকবাণীতে ৫ বোনের স্থলে ৪ বোন উল্লেখ করে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দুইজন ওয়ার্ড কমিশনারকে (জনার পেয়ার মোহাম্মদ ও জনাব চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী) মিথ্যা তথ্য দিয়ে বৈমাত্রেয় বোন সামছী ক্বমর চৌধুরীকে ওয়ারিশ না দেখিয়ে দুই ওয়ার্ডের দুটি মিথ্যা ওয়ারিশ সনদ গ্রহণ করে। মিথ্যা ওয়ারিশ সনদের ভিত্তিতে জমি বিক্রয়, জমি রেজিস্ট্রেসন, নামজারী ইত্যাদি সম্পন্ন করে।

পিতার মৃত্যুর ১০ বছর পর পিতাকে জীবিত দেখিয়ে জমি বিক্রয় করে, এবং এই জাল দলিলের ভিত্তিতে ক্রেতার নামে নামজারি করে, ক্রেতা ও ভূমি অফিসকে প্রতারিত করে।

বোনদের অসম্মতিতে শুধুমাত্র তিনভাইয়ের নামে অন্যায় অন্যায্য দানপত্র তৈরী করে। একমাত্র বৈমাত্রেয় বোনের সম্মতিবিহীন অন্যায় অন্যায্য অংশনামা তৈরী করে। তিন ভাই গোপনে ১০টির বেশি দলিলের মাধ্যমে জমি বিক্রয় করে। আদালতে মিথ্যা লিখিত বক্তব্য প্রদান করে।
ভিন্ন দাগে এবাদতখানা স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়ে মূল এবাদতখানার ভূমি আত্মসাত করে। একটি সুনির্দিষ্ট দাগ ও সীমা উল্লেখ করে জমি বিক্রয় করার পর ক্রেতাকে অন্য দাগে জমির দখল প্রদান করে অনাকাংখিত বিরোধ ও জটিলতা তৈরী করে। নামজারি হওয়ার বাইশ বৎসর পর অন্যায্যভাবে দাগ নম্বর সংশোধনের ঘোষণাপত্র প্রদান করে।
দীর্ঘ ত্রিশ বছরের অধিককাল তাদের অগ্রজ বৈমাত্রেয় বোন সামছী ক্বমর চৌধুরীর ন্যায্য হিস্যা আত্মসাতের অভিপ্রায়ে নিজেদের অধিকারে রাখে। মিথ্যা ওয়ারিশসনদে ও অন্য দাগে ক্রেতা রফিক গং কর্তৃক সামছী ক্বমর চৌধুরীর জীবদ্দশায় নিযুক্ত আমমোক্তার মো. নাছির উদ্দীনকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি, গ্রেফতার, প্রাণনাশের হুমকী প্রদান।
এ সমস্ত অপকর্মের মাধ্যমে ভূমি অফিসে দীর্ঘ অনিয়মের শৃংখল তৈরী হয়। বিভিন্ন দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলার উৎপত্তি হয়। অংশীদারগণের ও ক্রেতাগণের হয়রানি হয়, প্রতারিত হয়। সরকারি কর্মচারী, জনপ্রতিনিধিদের ও আদালতের বিপুল কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে বিড়ম্বনা তৈরী হয়। ভূমি অফিসের কার্যক্রম ও কর্মক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। প্রকৃত উত্তরাধিকারীগণ ভূমির দখল পেতে নামজারী করতে ব্যর্থ হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সামছী ক্বমর চৌধুরীর সন্তানগণ মোহাম্মদ আলতাফ-উল আলম, ড. মোহাম্মদ আরশাদ-উল আলম, মোহাম্মদ সাজ্জাদ, জাওয়াদ-উল-আলম চৌধুরী, নাছির উদ্দিন, সুখি বেগম, কায়নুল চৌধুরী, কামরাইন চৌধুরী প্রমুখ।

মন্তব্য করুন