নিউজগার্ডেন ডেস্ক: ঘোষিত ১২৫০০ টাকা মজুরি প্রত্যাখ্যান, মজুরি পুনর্বিবেচনা, ২৫ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা ও শ্রমিক হত্যার বিচারের দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনসমূহের জোট ‘মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলন’ চট্টগ্রাম জেলার উদ্যোগে সম্প্রতি নগরীর পুরাতন স্টেশন চত্বরে এক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ওএসকে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলা আহবায়ক আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে ও গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি জেলা সমন্বয়ক মিজানুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন জেলা সমন্বয়ক জাহেদুন্নবী কনক, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি জেলা সদস্যসচিব মোঃ সোহাগ, ওএসকে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশন নেতা জয়নাল আবেদীন জামাল, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা নেতা এড. ইমরান, নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো: সেলিম, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন নেতা মোঃ ফরহাদ, হেফাজুল বারী সুমন প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ঘোষিত ১২৫০০ টাকা মজুরি গার্মেন্টস শ্রমিকরা মেনে নেয়নি। এ মজুরি শ্রমিকদের সাথে তামাশার নামান্তর। এ কারণে শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন শ্রমিক এলাকায় বিক্ষোভে ফেটে পরেছেন। মজুরি পুনর্বিবেচনা না করে, পুলিশ-বিডিআর ও গুলি করে শ্রমিকদের আপনারা শান্ত করতে পারবেন না। শ্রমিকদের শ্রমে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানীকারক দেশ, অথচ মজুরি দেবেন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম, তা হয় না। মজুরি নির্ধারণ করেছেন ১১৫ ডলার, অথচ সর্বনিম্ন মজুরি পার্শ্ববর্তী ভারতে ১৭১ ডলার, ভিয়েতনামে ১৭০ ডলার, চীনে ৩০০ ডলার। ৫ বছরে চাল ১৫%, ডাল ১০০%, আটা ১০৩%, তেল ১২৬%, লবণ ৬৮%, ডিম ৬৭% এবং চিনি ১৮০% সহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দামও দফায় দফায় বেড়েছে। প্রশ্ন হলো এত কিছুতেও মালিকের ব্যবসার অগ্রগতি অব্যাহত থাকলে শ্রমিকের শ্রমের মূল্য কেন বাড়বে না? আপনারা বলেন, শিল্প বাঁচলে,শ্রমিক বাঁচবে। আমরা বলি, শ্রমিক না বাঁচলে, আপনাদের শিল্পও বাঁচবে না। আমরা দাবি জানাই, অবিলম্বে ঘোষিত মজুরি পুনর্বিবেচনা করেন, সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা মোট মজুরি নির্ধারণ করুন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “মজুরি চাইলে শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করবেন, মামলা দেবেন, আবার তাদের শ্রমে আনা রপ্তানী আয়ে দেশের অর্থনীতি গড়ে তুলবেন, এ হয় না। সরকার ও গার্মেন্টস মালিকদের হাতে আজ শ্রমিকের রক্ত। আমরা দাবি জানাই, অবিলম্বে শ্রমিক হত্যার বিচার করতে হবে, শিল্প এলাকা থেকে আধাসামরিক বাহিনী প্রত্যাহার ও মামলা-নির্যাতন-গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে, নিহতদের পরিবারকে এক জীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।“
সমাবেশ শেষে ২৫ হাজার টাকা মজুরির ঘোষণার দাবিতে একটি মিছিল নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউমার্কেট মোড়ে শেষ হয়।