নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রামের প্রথম ক্লিনিক্যাল পুষ্টিবিদ ও চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের অপারেশনাল কমিটির আহ্বায়ক এবং রোটারি ক্লাব অব চিটাগাং ইস্ট-এর ডিরেক্টর কমিউনিটি সার্ভিস রোটারিয়ান হাসিনা আক্তার লিপি বলেছেন, দামী খাবার মানেই পুষ্টিকর খাবার নয়। আমাদের সম্ভাবনাময় দেশে এতো পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার রয়েছে যে, প্রচুর ডলার খরচ করে বাইরের খাবার কেনার খুব বেশি প্রয়োজন নেই।
বিশ্ব ডায়বেটিস দিবস উপলক্ষে রোটারি ক্লাব অব চিটাগাং ইস্ট-এর উদ্যোগে পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ১৮ নভেম্বর, শনিবার সকালে ‘কিশোর-কিশোরদীদের পুষ্টি ও নিরাপদ স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সেমিনার’এ মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, কিশোর বয়স ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় শরীরের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। এ পরিবর্তনকে সুষ্ঠুভাবে হতে দেওয়ার জন্য খাবার-দাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিশোর-কিশোরীদের শর্করা, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং বিভিন্ন ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। কারণ, এই বয়সে শারীরিক বিকাশ ও বৃদ্ধি, পড়ালেখায় মনোনিবেশ, খেলাধুলা ও শরীরচর্চামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতে হয় বলে কিশোর-কিশোরীদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করতে হয়।বাড়ন্ত বয়সের জন্য উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য প্রচুর ক্যালরিযুক্ত খাবার, স্বাস্থ্যসম্মত, অসম্পৃক্ত চর্বি যুক্ত খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
এ ছাড়া টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতেও কিশোর-কিশোরীদের জন্য একটি সুষম ও স্বাস্থ্যকর ডায়েট অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে তিনি কিশোর-কিশোরীদের পর্যাপ্ত শাকসবজি ও আঁশ যুক্ত খাওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
মাইন্ডফুল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে সেমিনারের মুখ্য আলোচক আরো বলেন, মাইন্ডফুল খাওয়ার অর্থ খাবারটি টেবিলে বসে আস্তে আস্তে চিবিয়ে পুরোপুরি মনোযোগের সঙ্গে খাওয়া। আজকাল কিশোর-কিশোরীরা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে করতে বা টেলিভিশন দেখতে দেখতে খাবার খায়। ফলে খাবারে খুব মনোযোগ থাকে না। পেট ভরলেও তাই খাবার শরীরের জন্য খুব ইতিবাচক প্রভাব ফেলে না। এ জন্য পিতা-মাতাদের ও পরিবারের সবাইকে মাইন্ডফুল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। পাশাপাশি, সকালের খাবার বাদ দেওয়া যাবে না। সকালের খাবার না খেলে সারা দিনের পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যাবে না। প্রয়োজনে সকালে নিজের খাবার বানাতে পিতা-মাতাকে উৎসাহিত করতে হবে।
ক্লাব প্রেসিডেন্ট নাসিমা আখতারের সভাপতিত্বে সূচনা বক্তব্য দেন কলেজ অধ্যক্ষ রোটারিয়ান শ্যামল মজুমদার। ক্লাব সেক্রেটারি লেখক-সাংবাদিক রোটারিয়ান শওকত বাঙালির সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন-
ক্লাব এসাইন অ্যাসিস্ট্যান্ট গভর্নর জয় দেব চন্দ্র দাস জয়, ক্লাব লার্নিং ফ্যাসিলেটর পিপি কামরুল ইসলাম, ট্রেজারার পিপি মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ, সার্ভিস প্রজেক্ট চেয়ার রোটারিয়ান চম্পাকলি বড়ুয়া, পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীবৃন্দ।