নিউজগার্ডেন ডেস্ক: একদলীয় প্রহসনের ভাগ বাটোয়ারার নির্বাচন বর্জন করে ভোটের দিন জনগণকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
শনিবার (৬ জানুয়ারী) গণমাধ্যমে পাটানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। এটি একটি ভাগ বাটোয়ারার ইমিটেশনের নির্বাচন। একদিকে নৌকার প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী, ডামি প্রার্থী, ১৪ দলের উচ্ছিষ্ট ভোগী প্রার্থী, সুবিধাভোগী জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের প্রার্থী সবাইকেই গণভবন থেকে শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছে। এই ডামি নির্বাচন বর্জন করুন, ভোটের দিন ঘরে থাকুন, ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে এই অবৈধ নির্বাচনকে না বলুন। এটা কোনো ভোট নয়। ভোট দিয়ে এই অবৈধ সরকারের ক্ষমতা নবায়নে সহযোগিতা করবেন না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের গণদাবিকে উপেক্ষা করে সরকার তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন দিয়ে একতরফা নির্বাচনী তামাশার আয়োজন করতে গিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা করে ফেলেছে। এ নির্বাচন যে নির্লজ্জ প্রহসন তা ভোটের প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া দেখলেই বুঝা যায়। জনগণকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একটি ডামি নির্বাচন করে সরকার বিদেশিদের দেখাতে চায় দেশের একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। বাস্তবে এই নির্বাচনে ৫ শতাংশ ভোট পড়বে কি না সন্দেহ। বিএনপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের লোকজনও ভোট দিতে যাবে না। কারণ, তারা জানে, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার মাধ্যমে তাদের প্রার্থী ইতোমধ্যে জয়লাভ করে ফেলেছে। সরকার যত ষড়যন্ত্র করুক না, কেনো লাভ হবে না, সরকার পার পাবে না। জনগণ ওদের এই নীল নকশা সফল হতে দেবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ বর্তমানে কোটিপতিদের ক্লাবে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে নব্বই শতাংশ কোটিপতি রয়েছে। সরকার দলীয় প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া সম্পদ বৃদ্ধির বিবরণী দেখলেই বোঝা যায় ব্যাংক ডাকাত, ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের পাহারাদার দল আওয়ামীলীগ। পাতানো নির্বাচনের সংসদে এই কোটিপতি প্রার্থীরা যে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, লুটপাটকারী, পাচারকারীদের স্বার্থরক্ষা করবে তা হলফ করে বলা যায়। একতরফা নির্বাচন করতে গিয়ে সরকার দেশকে এক ভয়ংকর সংকটে ঠেলে দিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ ৭ জানুয়ারির একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বর্জন ও রুখে দাঁড়ানোর জন্য চট্টগ্রামবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে ডামি নির্বাচন বর্জন ও অবৈধ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবীতে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘন্টার হরতালের ১ম দিন শনিবার (৬ জানুয়ারী) নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও পিকেটিং করেছে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীরা। হরতালকে কেন্দ্র করে বিএনপির ৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে পাহাড়তলী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আনিসুজ্জামান পাটোয়ারী টুটুল, আকবর শাহ থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সাখাওয়াত হোসেন ও থানা যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম রনিকে গ্রেফতার করেছে আকবর শাহ থানা পুলিশ।
তাছাড়া মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মনজুর আলম চৌধুরী মঞ্জু ও মহানগর যুবদলের সহ সভাপতি শাহেদ আকবরকে আসামি করে আকবর শাহ থানায় নতুন মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
হরতালের সমর্থনে শুক্রবার রাতে মহানগর যুবদলের প্রচার সম্পাদক জিল্লুর রহমান জুয়েল, সহ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাবু, সদস্য সাইদুল হক শিকদার, বায়েজিদ থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মঞ্জুর আলম মঞ্জু ও পাঁচলাইশ ওয়ার্ড যুবদল আহবায়ক মোহাম্মদ হাসানের নেতৃত্বে নগরীর অক্সিজেন কুয়াইশ সড়কে মশাল মিছিল, মহানগর যুবদলের কৃষি সম্পাদক নুরুল আমিন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি নওশাদ আল জাসেদুর রহমান ও চান্দগাঁও থানা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুর রহমান আলফাজের নেতৃত্বে আরাকান সড়কের মৌলভী পুকুর পাড় এলাকায় মশাল মিছিল, শনিবার সকালে কোতোয়ালী থানা যুবদলের আহবায়ক নুর হোসেন নুরুর নেতৃত্বে ফিরিঙ্গীবাজার সংযোগ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মনজুর আলম তালুকদার ও সদস্য সচিব জমির উদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে মিছিল, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আলিফ উদ্দিন রুবেলের নেতৃত্বে চট্টেশ্বরী সড়কে বিক্ষোভ মিছিল, চাঁন্দগাও থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক খোরশেদ আলম রুবেলের নেতৃত্বে বাহির সিগনাল এলাকায় ও হালিশহর থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামিউল কবির সিয়ামের নেতৃত্বে হালিশহর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।