নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রামের কোতোয়ালীর ব্যাটারি গলি এলাকায় সাবেক মন্ত্রীর ছেলে কর্তৃক ক্লিফটন গ্রুপের জায়গা জবর দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে। আজ ২৫ মার্চ (সোমবার) দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এম এ সিদ্দিক চৌধুরী জানান, নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন ব্যাটারি গলি ধোপাপাড়ায় ক্লিফটন গ্রুপের একটি জায়গা জবরদখল করে নিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী এম এম মান্নানের পুত্র আব্দুল লতিফ টিপুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী। দিনদুপুরে প্রকাশ্যে ৪০-৫০ জন বহিরাগত অস্ত্রধারী, মুখোশধারী সন্ত্রাসী এসে বাড়িতে থাকার কেয়ারটেকার ও ভাড়াটিয়াদের জোরপূর্বক, অস্ত্রের মুখে বের করে দিয়ে, তাদের জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাড়ি এবং জায়গাটি দখল করে নিয়েছে। ভাড়াটিয়াদের জিনিসপত্র সন্ত্রাসীরা লুট করে নিয়ে গেছে।
চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালী থানাধীন আলমশাহ কাঠগড় সিএম-৭২ দাগের আন্দর এবং সামিল আর. এস ১১৫ নং খতিয়ানের আর এস ৩৯৮ দাগের আন্দর তৎ সামিল পি এস ৪০/১ নং খতিয়ানের পি এস ৮৭/৬৭ দাগাদির আন্দর তৎ সামিল ভুল বি.এস ৪২/৪৩ নং খতিয়ানের বিএস ৫৫/৬০/৫৪ দাগাদির মোট ১২৪৮ শতাং বাড়ি ভিটা ও প্রাইভেট চলাচলের রাস্তা।
এই তফসিলের সম্পত্তিটি স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্লিফটন গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রফেসর এম ডি এম কামাল উদ্দিন চৌধুরীর মালিকানাধীন। ওই সম্পত্তিতে দুটি টিনশেড ঘর রয়েছে। সেখানে কোম্পানির কেয়ারটেকার ও একজন ভাড়াটিয়া বসবাস করে আসছে। ওই সম্পত্তি নিয়ে স্থানীয় কিছু লোকের সাথে ক্লিফটন গ্রুপের বিরোধ ছিল। বিরোধী বিষয় নিয়ে গ্রুপের চেয়ারম্যান বিজ্ঞ আদালতে অপর মামলা- ৩১৩/২১ দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
সম্পত্তিটির ওপর নজর পড়ে সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নানের ছেলে আব্দুল লতিফ টিপুর। তিনি নানা সময়ে জায়গাটি জবরদখলের চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে গত ২৩ মার্চ, শনিবার দিনদুপুরে প্রকাশ্যে মরহুম এম এ মান্নানের পুত্র আব্দুল লতিফ টিপুর নেতৃত্বে কাজীর দেউড়ি নূর আহমদ সড়কের আব্দুল সাত্তারের ছেলে আব্দুস শুকুর, আব্দুল মান্নান, আব্দুল রশিদের ছেলে আব্দুল সালামসহ ৪০-৫০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী জায়গাটি জবরদখল করার জন্য জড়ো হয়। সন্ত্রাসীদের সবার হাতে অস্ত্র এবং তাদের মুখে মুখোশ পরহিত অবস্থায় ছিল। তখন কোম্পানির সম্পত্তি দেখাশোনায় থাকায় ইঞ্জিনিয়ার অনিমেষ এবং সিকিউরিটি গার্ড মতিয়ার রহমান তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাদের গালিগালাজ ও মারধর করে, তাদের দখলে কোনো বাধা দিলে ‘লাশ ফেলা হবে’ বলে হুমকি দিয়ে ভাড়াটিয়াদের জিনিসপত্র ঘর থেকে বের করে দেয়। তারা সেখানে থাকা কোম্পানির লোকজনকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে, ভাড়াটিয়াদের জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে জায়গাটি জবরদখল করে নেয়।
সন্ত্রাসীরা সিসি ক্যামেরাগুলো ভাঙচুর করে এবং অন্যান্য স্থাপনাগুলোও ভাঙচুর করে। এ অবস্থায় দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার অনিমেষ গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রফেসর এম ডি এম কামাল উদ্দিন চৌধুরীকে অবহিত এবং জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর ফোন করে ঘটনার বিষয়ে অবগত করেন। এর মধ্যে কোতোয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে থানায় গিয়ে মামলা করার কথা বললেও পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। তারা জিডি করার পরামর্শ দিলে গ্রুপের সিনিয়র সহকারী এস্টেট ম্যানেজার এ এফ এম সাহাব উদ্দীন কোতোয়ালী থানায় এ ব্যাপারে জিডি করেন। (জিডি নং ২২২৮, তারিখ: ২৩.০৩.২০২৪)
লিখিত বক্তব্যে এম এ সিদ্দিক চৌধুরী আরো জানান, দেশের আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সন্ত্রাসীরা দিনদুপুরে প্রকাশ্যে অপরের সম্পত্তি জবরদখল করে নিয়েছে-এটা কারও জন্যই ভালো লক্ষণ নয়। এ ধরনের ঘটনা আমরা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে যে কোনো দিন যে কেউ এমন অন্যায়ের শিকার হতে হবে সকলকে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ক্লিফটন গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ আলী হায়দার চৌধুরী, জিএম (এস্টেট) সৈয়দ মোহাম্মদ সেলিম ও লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জিএম (এডমিন) এম এ সিদ্দিক চৌধুরী।