নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের আন্দোলন চলছে, নতুনভাবে আন্দোলনের কিছু নেই। এই ৯৫ শতাংশ মানুষ আমাদের আন্দোলনের অংশ। গণতন্ত্রকামী সবাই এই আন্দোলনে আছে। হালুয়া রুটির জন্য, এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য আমরা আন্দোলন করছি না। ৭ তারিখের আগে বিএনপির আন্দোলন যত শক্তিশালী ছিল ৭ তারিখের পর তা আরও বেশি বেগবান ও শক্তিশালী হয়েছে।
তিনি বলেন, জানুয়ারির ৭ তারিখের নির্বাচনে জনগণ গণভোট দিয়েছে নির্বাচনে যাবে কি যাবে না। বিএনপির পক্ষ থেকে ডাক ছিল নির্বাচন বয়কটের ভোট বর্জনের। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোট না দিয়ে নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে নগরীর দি কিংঅব চিটাগাং কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির উদ্যোগে কারা নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সম্মাননা অনুষ্ঠান ও ইফতার মাহফিলে প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চয়াালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদীন আহম্মেদ।চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি আহবায়ক বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য গোলাম আকবর খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে
ও নেতাকর্মীদের সংবর্ধনা, সম্মাননা প্রদান ও ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিচারপতি ফয়সাল মোহাম্মদ ফয়জী, ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়য়ুয়া, সদস্য তরিকুল আলম তেনজিং, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, এডভোকেট এনামুল হক, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, ডাঃ খুরশিদ জামিল চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম, অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, আলহাজ্ব মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন, মোহাম্মদ নুরুল আমিন, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়ত হোসেন, সরোয়ার আলমগীর, কাজী সালাউদ্দীন, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, জসীম উদ্দিন সিকদার, আব্দুল আউয়াল চৌধুরী, এডভোকেট এম এ তাহের, অধ্যাপক জসীম উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ সেলিম চেয়ারম্যান, অধ্যাপক কুতুবউদ্দিন বাহার, শাহেদুল ইসলাম চৌধুরী,মোহাম্মদ জাকের হোসেন, আবু আহমেদ হাসনাত, আবছার আহম্মদ,হাসান মোহাম্মদ জসীম, সরোয়ার উদ্দিন সেলিম, মুরাদ চৌধুরী, নুরুল হুদা, মনিরুল আলম জনি প্রমুখ।
সভায় কারামুক্ত হওয়া বিএনপি নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী অরো বলেন,দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে লুটপাট হয়ে গেছে আর সরকার এখন ইফতার মাহফিল না করে কৃচ্ছ্রসাধন করার কথা বলে বাংলাদেশের ইফতার মাহফিল সংস্কৃতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে।দেশে এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে ।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষের ক্ষমতা দখল করে ৭ জানুয়ারী নির্বাচনে তারা (আওয়ামী লীগ) পরাজিত হয়েছে। বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী সবারই মনোবল অটুট আছে এবং শক্ত আছে।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসার জন্য সরকারের প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা প্রস্তাব করেছে তারাই বলতে পারবে। আমাদের তো কোনো প্রস্তাবের কথা জানা নেই।
সভাপতির বক্তব্য গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, দেশে বার বার বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর কারণ হলো লুটপাট। দাম বাড়ানোর মাধ্যমে গ্রাহকদের পকেট থেকে বছরে হাজার কোটি টাকা লুটে নেবে আওয়ামী সিন্ডিকেট। বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে সাধারণ মানুষের। দেশীয় শিল্পকারখানা ধ্বংস করে কর্মসংস্থান বন্ধের মাধ্যমে দেশকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়ার চক্রান্ত চলছে। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি দেশের শিল্পের শক্তি ধ্বংস করে দেবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যসহ জীবনযাত্রার সব খরচ বেড়ে যাবে। মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য এস এম ফজলুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার,ভিপি হারুণ, বিএনপির নির্বাহী কমিটি সদস্য বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজি,ব্যারিষ্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন,হুম্মম কাদের চৌধুরী,সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া ।
বিশেষ অতিথি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন,ওবায়দুল কাদের যদি প্রতি সপ্তাহে সিঙ্গাপুর যেতে পারে, বেগম খালেদা জিয়া কেন যেতে পারবে না। ম্যাডামের কিছু হলে, সারা বাংলাদেশে আগুন জ্বলবে। সরকার বুঝতে পারছেন না? আপনারা বুঝবেন না। কারণ বিভিন্ন বাহিনী নিয়ে আছেন। আরে আন্দোলনের জোয়ারে এই বাহিনী এক মিনিটের মধ্যে কোথায় চলে যাবে, টেরও পাবেন না।তিনি সবাইকে ঐক্য হতে হবে।আমাদেরকে শক্ত হাতে দলীয় আদর্শের প্রতি বিশ্বাসী লোকদের নিয়ে আসতে হবে। ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আমরা অনেককে হারিয়েছি। তাই আমরা নতুন পরিকল্পনা শুরু করতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য এস এম ফজলুল হক বলেন, দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ আজকে দিশেহারা। সরকারের সিন্ডিকেটের কারণে এই অবস্থা হয়েছে। সরকার জনগণের কথা চিন্তা না করে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। জনগণ এখন এই সরকারের পাশে নেই। তিনি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় এই গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন,বর্তমানে দেশে গণতন্ত্রের নামে নির্বাচন আছে। কিন্তু জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। আদালত আছে কিন্তু বিচার নাই। ব্যাংক আছে কিন্তু টাকা নেই। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার অধিকার নাই। সরকারের এই অপকর্ম থেকে মুক্তি পেতে জণগণকে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন,সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে যখন তখন গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়িয়ে সরকার জনগণের পকেট কাটছে। আওয়ামী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার এই বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে।