চট্টগ্রামে ভয়াল ২৯ এপ্রিল’৯১ স্মরণে ৭ দফা দাবি আদায়ে ‘নাগরিক অবস্থান কর্মসূচী’

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার মুক্তবুদ্ধি চর্চার গবেষণাধর্মী ও মানবাধিকার সংগঠন “প্রজন্ম চট্টগ্রাম’র আয়োজনে, উপকূলীয় উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম ও সাধনপুর ফুটন্ত গোলাপ-বাঁশখালীর যৌথ সহযোগিতায়, বাংলাদেশের স্মরণকালের বিগত ২৯ এপ্রিল’৯১ মহা প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে নিহতদের ৩৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও ৭ দফা দাবির আদায়ের লক্ষ্যে “নাগরিক অবস্থান কর্মসূচী” গতকাল ২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার, বিকাল ৩ টায়, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে কক্সবাজার চেম্বারে সভাপতি ও উপকূলীয় উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ সানাউল্লাহর সভাপতিত্বে এবং প্রজন্ম চট্টগ্রাম’র প্রধান নির্বাহী চৌধুরী জসীমুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।

৭ দফা দাবি আদায়ের পক্ষে সহমত জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রজন্ম চট্টগ্রাম’র চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবুল কাসেম, প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযোদ্ধা গবেষণা কেন্দ্র-ট্রাস্ট চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, আলোকচিত্র প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন করেন প্রমোটিং বাংলাদেশ ট্যুরিজম অব প্রজন্ম চট্টগ্রাম’র অন্যতম উপদেষ্টা পরিবেশবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. মো. ইদ্রিস আলী, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলা প্রচলন উদ্যোগের মহাসচিব মসিউর রহমান খান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনার-বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি এম এ হাশেম রাজু, ন্যাপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠুল দাস গুপ্ত, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কৃষকলীগের সভাপতি মো. আতিকুর রহমান চৌধুরী, চাটগাঁ ভাষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন চৌধুরী, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক অধ্যক্ষ ড. কামাল উদ্দিন ও চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজের যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক কাজী মহসিন। নাগরিক অবস্থান কর্মসূচীতে ২৯ এপ্রিল’৯১ স্মরণে ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করেন প্রজন্ম চট্টগ্রাম’র নির্বাহী সদস্য বাচিক শিল্পী মেজবাহ চৌধুরী।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক প্রকৌশলী কবি সঞ্চয় দাশ, একুশে বইমেলা পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শওকত আলী চৌধুরী সেলিম, গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রাম’র প্রধান সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি, ক্রেতা সুরক্ষায় নিরাপদ খাদ্য আন্দোলনের আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কাজী রাজেশ ইমরান, বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সিঞ্চন ভৌমিক, বিশিষ্ট কলামিস্ট নেচার আহমদ খান, মানবাধিকার সংগঠক সাংবাদিক ওসমান জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সংগঠক কবি সজল দাস, বঙ্গবন্ধু মানবকল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি ফরহাদুল হাসান মোস্তফা, চন্দনাইশ ছাত্র সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার ও দেশচিন্তা কাগজের সম্পাদক মো. ইমরান সোহেল।

সমগ্র অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ইভেন্টে সহযোগিতা করেন প্রজন্ম চট্টগ্রাম এসএসসি ব্যাচের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিবৃন্দ মো. হুসনুল মোবারক, এহতেশামুল হক মাহবুব, এম কাইছার উদ্দিন, রায়হান ইসমাইল, মোহাম্মদ হৃদয়, জয় মজুমদার, মো. তুরাকুর ইসলাম ও অক্ষয় দাশ।

দাবিগুলি চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের সকল উপকূলীয় অঞ্চলে বিগত ২৯ এপ্রিল’৯১ মহা প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে আহত-নিহতসহ ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রকাশ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। উপকূলীয় অঞ্চলে পরিকল্পিত অবকাঠামোগত উন্নয়নে আধুনিক টেকসই স্থায়ী বেড়ীবাঁধ নির্মাণ ও প্রাকৃতিক কৃষিসম্পদের সুরক্ষা এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণসহ গ্রীষ্ম মৌসুমে নলকূপ থেকে শক্তিশালী ওয়াটার পাম্প স্থাপনের মাধ্যমে সুপেয় পানির উত্তোলনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে জীবন এবং সম্পদ বাঁচাতে সমন্বিত উপকূল সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম এবং গাছপালার বনায়ন গড়ে তোলা। উপকূলীয় অঞ্চলে পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ এবং নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন গ্রহণ করা। উপকূল অঞ্চলে দূর্যোগকালীন প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা এবং পুর্নবাসনসহ সরকারের বিভিন্ন সহযোগিতার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ঘন ঘন সামুদ্রিক ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূল এবং সমুদ্রের দূষণ রোধে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ১৯টি জেলা নিয়ে আলাদা “উপকূলীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়” গঠন ও উপকূলীয় অঞ্চলে জনসাধারণের জীবন মান উন্নয়ন এবং সার্বিক নিরাপত্তার প্রদান করা। এ ব্যাপারে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচীর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন