বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা শাখা, বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটি, চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে সংগ্রাম, স্বাধীনতা, সমৃদ্ধি, স্মার্ট আলোক ঝলমল বাংলাদেশ গঠনের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন, ঈদ পুনর্মিলনী ও জাহাজী শ্রমিকদের ১১ দফা অমিমাংসিত দাবি বাস্তবায়ন ও নৌ সেক্টরে চলমান সংকট সমাধান করার দাবিতে শ্রমিক সমাবেশ ২৬ জুন ২০২৪ খ্রি. বুধবার সন্ধ্যা ৬.৩০ মি. নবাবিয়ানা রেস্টুরেন্টের হল রুমে ২য় তলা শহীদ বশরুজ্জামান চত্বর, কর্ণফুলী নতুন ব্রীজ-এ বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি এম নুরুল হুদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সফল সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ. জ. ম নাছির উদ্দিন। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার শ্রমিক বান্ধব সরকার। তিনি সরকারে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি সহ অসংখ্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন এ-সরকার। জাহাজী শ্রমিকদের অমিমাংসিত ১১ দফা যৌক্তিক দাবি গুলোও সরকার বিবেচনায় রেখেছেন।
১১দফায় শ্রমিকদের রুটি রুজি সহ ন্যায় সংঙ্গত অধিকারের কথা বলা হয়েছে। জাহাজী শ্রমিকদের পেশকৃত ন্যায্য উক্ত ১১ দফা সমূহের বিবরণ তুলে ধরেন তিনি যথাক্রমে – ১. জাহাজী শ্রমিকদের মালিক কর্তৃক নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্র, সার্ভিস বুক প্রদান ও কল্যাণ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে কন্টিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করতে হবে। ২. গত ৩০ মার্চ ২০২৩ইং এর গেজেট অনুযায়ী বকেয়া পাওনা সহ বেতন পরিশোধ করতে হবে। ৩. মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১২ লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে। ৪. ভারতগামী জাহাজী শ্রমিকদের ভারতের সীমানার ল্যান্ডিং পাস, পোর্ট ভিসা ও সুচিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। ৫. বালুবাহী বাল্কহেড শ্রমিকদের উপর নৌ-প্রশাসনের হয়রানী, মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে। ৬. নৌ-পথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও নৌ-প্রশাসনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ৭. নিরাপদে জাহাজ রাখার পোতশ্রয় নির্মান করতে হবে এবং চরপাড়া সী-বিচ পতেঙ্গা এলাকায় জাহাজের কিনারায় উঠানামার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত ঘাটের ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. মাস্টার, ড্রাইভারশীস পরীক্ষা সহ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএ এর সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। ৯. চট্টগ্রামে সিরিয়ালের নামে জাহাজ মালিকদের সৃষ্ট সমস্যা সংকট তাদের নিজেদের ব্যাপার, যা জাহাজ মালিকদেরই সমাধান করতে হবে। ১০. সকল প্রকার জাহাজী শ্রকিকদের জন্য পোতশ্রয় নির্মাণ করে ইজারামুক্তভাবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। ১১. বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পেশকৃত ১১ দফার অমিমাংসিত দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন উল্লেখিত দাবি গুলো সরকার এবং মালিক পক্ষ বারংবার দাবি মেনে নেওয়া আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপ করছে তাদের আশ্বাসে শ্রমিকরা আন্দোলন থেকে সড়ে দাড়াঁলে তাদের আর এই বিষয়ে হুষ থাকে না। তাই এবার দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জনমত সৃষ্টি এবং শ্রমিকদের সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। সভায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে জাতীয় শ্রমিক লীগের সহ সভাপতি, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শফর আলী বলেন আওয়ামী লীগের দুটি বড় আর্জন হলো স্বাধীনতা এবং উন্নয়ন।
আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ সিকদার মাস্টার, চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় শ্রমিক লীগ সহ সভাপতি মো কামাল উদ্দিন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: আজগর হোসেন তালুকদার, বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন মাঝি, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো: নুরুল হোসেন, কার্যকরী সভাপতি নুরুল আলম মাষ্টার, সহ সভাপতি মো: ইদ্রিছ মোল্লা, হাবিবুর রহমান মাষ্টার, আবু তাহের মাষ্টার, এস এম মনিরুল ইসলাম মাষ্টার, রেজাউল করিম সেলিম, আকতার হোসেন মাষ্টার, শাহাদাত মাষ্টার, মাওলানা নুরুল ইসলাম প্রমূখ।
সভায় বিপুল সংখ্যক শ্রমিক জনতা উপস্থিতির মাধ্যমে মুহু মুহু শ্লোগানে মুখরিত হয়ে পড়ে। প্রধান অতিথি জননেতা আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং ১১ দফা সম্ভলিত একটি লিপলেট তাঁকে প্রদান করা হয়।