নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বিগত কয়েক দিনের ব্যবধানে আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার তিন নিরীহ ও নিরপরাধ শিক্ষার্থী র্যাবের হাতে গ্রেফতার এবং অনতিবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানিয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন জামিয়া প্রধান আল্লামা মুফতি আবু তাহের কাসেমী নদভী।
গত ঈদুল আযহার ছুটিতে জামেয়ার জামাতে চাহারুমের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ ওজাইর (পিতা: ইদ্রিস আলী, সোনাগাজী, ফেনী) এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আশরাফুল ইসলাম হামিম, (পিতা: নুরুল আলম। সোনাগাজী, ফেনী। ঢাকার জামিয়াতু ইব্রাহিম এর তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হস্তলিপি প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছিল।
প্রশিক্ষণ শেষে ঢাকা থেকে ফেরার পথে তাদেরকে গুম করা হয়। অতঃপর একটি কালো মাইক্রোবাসে করে আশরাফুল ইসলাম হামিমকে তার বাড়ির পাশে রেখে গেলেও ওজাইরকে কক্সবাজারে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে গ্রেফতার দেখায় র্যাব। জামাতে চাহারুমের আরেকজন ছাত্র মোঃ নেয়ামত উল্লাহ নিজ বাড়ি ভোলা থেকে আসার পথে লক্ষীপুর থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
ইতিপূর্বে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আরেকজন ছাত্র মুহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে জামিয়ার পাশ থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং কয়েকদিন পরে তাকেও একইভাবে জঙ্গি বলে গ্রেফতার দেখায়।
আল্লামা মুফতি আবু তাহের কাসেমী নদভী প্রশাসনের উদ্দেশ্য বলেন, এসব জঙ্গি নাটক অবিলম্বে বন্ধ করুন। নিরীহ মাদরাসা ছাত্রদের টার্গেট করবেন না। দুর্বলের সঙ্গে জোর দেখিয়ে কাপুরুষতার পরিচয় দেবেন না। দেশের সাধারণ নিরীহ আলেম সমাজ ও মাদ্রাসা ছাত্র এবং সাধারণ নাগরিকদের ওপর জুলুম করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করবেন না।
আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া প্রধান আরো বলেন, জঙ্গি ট্রাম্পকার্ড ব্যবহার করে পশ্চিমাদের আগের মতো বোকা বানানো যাবে না। মিথ্যা নাটকের কারণে স্যাংশন খেয়ে দেশের ভাবমর্যাদা আগেই ধুলায় লুটিয়ে দেয়া হয়েছে। তবুও এখন জঙ্গি নাটক করা হচ্ছে কওমি মাদরাসা ধ্বংস করার এজেন্ডা বাস্তবায়নের স্বার্থে। আমরা দেশে শান্তিতে থাকতে চাই, আলেম ওলামা ও ছাত্রজনতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে, গ্রেফতার ও হয়রানি করে সরকারের সাথে সংঘাত তৈরি করবেন না। এসব অন্যায় কর্মতৎপরতা বন্ধ করা না হলে দেশের আপামর তৌহিদী জনতা কখনোই নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না।
জামিয়া প্রধান বলেন, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠান। এর সুনাম ও সুখ্যাতি দুনিয়া জোড়া। জামিয়া কর্তৃপক্ষ ও জামিয়ার ছাত্ররা দ্বীনদরদী ও দেশ প্রেমী। তাদের সাথে জক্সগীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের কোন সম্পর্ক নেই। গ্রেপ্তারকৃত জামিয়ার তিন ছাত্র নিরপরাধ। তাদের স্বভাব চরিত্র ভালো। জামিয়ায় অবস্থানকালে তারা প্রচলিত রাজনৈতিক কোন দলের সাথে এবং রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা বিরুধী কোন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিল না। তারা জঙ্গী নয়। জঙ্গীবাদের সাথে তাদের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই। মূলত প্রশাসন নতুন করে জঙ্গী নাটক সাজিয়ে কওমী মাদ্রাসা বিরুধী ঘৃণ্য কোন চক্রান্তে মেতে উঠেছে। দেশের সবোর্চ্চ মহল থেকে “কখনও কওমী মাদ্রাসায় জঙ্গী তৈরি হয়নি, হতেও পারে না”। বারবার এ জাতীয় বক্তব্য দেয়ার পরেও কওমী মাদ্রাসার কোন ছাত্র সম্পর্কে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ আনা দূরভিসন্ধীমূলক এবং দায়িত্বহীন কাজ।
জামিয়া প্রধান আরও বলেন, “নিঃসন্দেহে এটি পরিকল্পিতভাবে জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার সুনাম নষ্ট করা এবং জামিয়ার নিরপরাধ ছাত্রদের জীবন ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্র।আমরা অনতিবিলম্বে নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের মুক্তি এবং ভবিষ্যতে এমন দায়িত্বহীন কাজ থেকে বিরত থাকতে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই”।