কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে মহানগর বিএনপির প্রতিবাদ

সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মহানগর কৃষক দলের আহবায়ক মো. আলমগীর, ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনসহ বিএনপির প্রায় দু শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতৃবৃন্দ।

কোন কারণ ছাড়া এধরণের গণ গ্রেফতারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারন সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, কৃষকদলের সদস্য সচিব কামাল পাশা নিজামী, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলায় হতাহতের ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে চট্টগ্রামে বিএনপির নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার, বাসায় বাসায় তল্লাশির নামে হয়রানি, আতঙ্ক ছড়াচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের পুলিশ বাসায় অভিযান চালিয়ে কৃষক দলের আহবায়ক মো. আলমগীর ও স্বেচ্ছাসেবক দলের জমির উদ্দিন নাহিদসহ ৪০ জন নিরীহ নেতাকর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে। বুধবার দুপুরে নিহত শিক্ষার্থীদের গায়েবানা জানাজা শেষে বিএনপি কার্যালয় থেকে বাসায় ফেরার পথে কাজীর দেউরী মোড় থেকে ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। তাছাড়া বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ চকবাজার ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিম বাবলু ও দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী সোহরাব হোসেন চৌধুরী শাহীনসহ ৮৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবারও এই অন্যায় গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে হিটলারের নাৎসি কায়দায় দেশ পরিচালনা করছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেসামাল হয়ে নিরীহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা করে উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারান্তরীণ করছে। দেশে এক ব্যক্তির ইচ্ছার শাসন চালানো হচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা আদালতে হাজিরা দিতে গেলেই তাদের জামিন বাতিল করে কারাবন্দী করা হচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতনকে এক ধরনের খেলায় পরিণত করেছে বর্তমান জুলুমবাজ সরকার। কিন্তু এসব অপকর্ম করে রাষ্ট্রক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে পারবে না সরকার। জনগণ এখন বর্তমান সরকারের নিষ্ঠুর শাসন থেকে মুক্তি পেতে ঐক্যবদ্ধ। সাধারণ শিক্ষার্থীসহ দেশের মানুষ জেগে উঠেছে।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দিন নাহিদ, পতেঙ্গা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম, যুগ্ম সম্পাদক জসিম উদ্দিন, ⁠বিএনপি নেতা কাজি ইসমাইল, নগর যুবদলের পরিবেশ সম্পাদক এস এম বখতেয়ার উদ্দিন, কোতোয়ালী থানা যুবদলের আহবায়ক নুর হোসেন নুরু, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, ইপিজেড থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ইউসুফ সুমন, সদরঘাট থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কাউসার হোসেন রাব্বি, চাঁন্দগাও থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাপ্পী, যুগ্ম আহবায়ক নাহিদুল ইসলাম মুহিম, পাহাড়তলী থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক অভি, বন্দর থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক ওয়াহিদ ইমাম খান সারাত, হালিশহর থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক জুবায়ের উদ্দিন নয়ন, উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতা মিনহাজ উদ্দিন রাব্বিকে না পেয়ে তাঁর নিরপরাধ বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. মিজান, হালিশহর থানা শ্রমিক দলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, সরাইপাড়া ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. দিদার, মো. হারুন, ডবলমুরিং থানা যুবদল নেতা সোহেল আরমান, মো. মানিক, ইপিজেড থানা যুবদল নেতা মো. ইফতেখার, ছাত্রদল নেতা হৃদয়, দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য মো. ইয়াছিন, চান্দগাঁও ওয়ার্ড যুবদল নেতা জয়নাল আবেদিন সাকিব, পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. আলাউদ্দিন, আমিন শিল্পাঞ্চল সাংগঠনিক ওয়ার্ড যুবদলের আহবায়ক ফয়সাল হোসেন মানিক, পাঁচলাইশ থানা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন আহমেদ জামাল, নিউ শহীদ লেইন ইউনিট যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. হান্নান, উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড যুবদল নেতা পারভেজ আলম, মো. ইমন, মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. রাশেদ ও মো. মহিউদ্দিন, জালালাবাদ ওয়ার্ড যুবদল নেতা আব্দুর রহিম ও শ্রমিক দল নেতা মো. আজাদ, চকবাজার ওয়ার্ড বিএনপি নেতা হাসনাত মাসুদ, পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড যুবদল নেতা মো. লোকমান।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।

মন্তব্য করুন