নিউজগার্ডেন ডেস্ক: দেশজুড়ে চলমান বৈষম্যবিরোধী শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার, হয়রানি ও ২০টি মিথ্যা মামলায় ৩৯০ জনকে গ্রেপ্তারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চট্টগ্রাম নগরীতে পুলিশের অভিযানে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশ গিয়ে হয়রানি করছে। এলাকা ভাগ করে পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য বাহিনী “ব্লক রেইড” ও নির্বিচার গ্রেপ্তার করে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) থেকে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) পর্যন্ত ১৪ দিনে চট্টগ্রামে বিএনপির ৩৯০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। বিভিন্ন থানায় ২০ টি মামলা দায়ের করেছে। এরমধ্যে গতকাল সোমবার থেকে আজকে বিকেল পর্যন্ত পাঁচলাইশ থানা যুবদলের সদস্য এনামুল ইসলাম এনাম, পাহাড়তলী থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সাজ্জাদ হোসেন, তানজিন জিহাদ, সরাইপাড়া ছাত্রদল নেতা মো. আরজু, উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড যুবদল নেতা আব্দুর রহিম, ৩৮ নং ওয়ার্ড যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম আকাশ, উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুমন চৌধুরীসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে। ভোট ডাকাত সরকার পুলিশকে দিয়ে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে উদ্ভট মামলা করেছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা মামলা পরিকল্পিত ও মিথ্যা। সরকার দলীয় লোকজন পরিকল্পিতভাবে একেকটি ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির নামে মামলা দিচ্ছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে কব্জায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে সরকার টিকে আছে। প্রশাসন যন্ত্রকে তাদের অবৈধ ক্ষমতায় ঠিকে থাকার খুটি হিসেবে ব্যবহার করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী এবং আওয়ামীলীগের সহিংস কর্মীরা নজীরবিহীন দমন পীড়নের তান্ডব চালিয়েছে। শুরু থেকেই এই ছাত্র আন্দোলনকে সরকারি দল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করতে চেয়েছে। সরকারের একাধিক মন্ত্রী চরম দায়িত্বহীন ভাষায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানিয়েছে। দেশের বেসামরিক নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দমনের জন্য সেনাবাহিনী ও সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়োজিত করা হয়েছিল, কারফিউ জারি করে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং হেলিকপ্টার থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজীরবিহীন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এত অল্প সময়ে কোনো একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দুই শতাধিক মানুষ হত্যার নজির ইতিহাসে নেই। এই বিপুল প্রাণহানির দায় সরকারের। বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে সরকার হত্যাকান্ডের দায় এড়াতে পারবে না। হত্যাকান্ডর বিষয়টি পাশ কাটিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের অপরাধ ঢাকা যাবে না। ছাত্র জনতার উপর হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনার কোনো তদন্ত না করে কেবল নাশকতার মামলা দায়েরের মাধ্যমে হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা লোককে আসামি করা ও কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তারের ঘটনা অত্যন্ত নিপীড়নমূলক। অবিলম্বে
সাধারণ মানুষ হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রামে অবিলম্বে গণগ্রেপ্তার বন্ধ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ ইতিপূর্বে চট্টগ্রামে গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে হয়রানি বন্ধ করার দাবী জানান।