নিউজগার্ডেন ডেস্ক: ফেসবুকে ব্যবসার নামে প্রতারণা করছে একটি চক্র ইন্টারনেটভিত্তিক সাইবার জগৎ এখন অপরাধের আখড়া। এমন কোনো অপরাধ নেই যা এই জগতে ঘটছে না। দেশে বিভিন্ন অপরাধ বিস্তার থেকে শুরু করে যাবতীয় অপরাধ-প্রতারণার এক ভয়ঙ্কর ফাঁদে পরিণত হয়েছে দেশের সাইবার জগৎ। বিশেষ করে বহুল ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককেন্দ্রিক নানা অপরাধ-প্রতারণা ঘটে চলছে অহরহ। সামান্য অসাবধানতার কারণে এর ব্যবহারকারী প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কেউ কেউ পড়ছেন মারাত্মক হয়রানিতে।
মানুষ এখন কেবলই মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করেন না, টুকটাক পণ্য থেকে শুরু করে দামি পণ্য পর্যন্ত কেনা হচ্ছে অনলাইন থেকে। ফলে দিন দিনই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অনলাইন শপিং ব্যবস্থা। তবে অনলাইনে কেনাকাটা করতে গিয়ে নানাভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেকে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অসংখ্য অনলাইন শপিং পেজ রয়েছে, যেগুলো নানা রকমের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে থাকে। এরমধ্যে কিছু পেজ পাওয়া যায় যেগুলো কখনো কখনো এক ধরনের পণ্য দেখিয়ে অন্য ধরনের কিংবা নিম্নমানের পণ্য ডেলিভারি দিয়ে থাকে। আবার, কিছু কিছু পেজে অগ্রিম মূল্য পরিশোধের পরেও ফেইজটি বন্ধ করে দিয়ে থাকে। এমতাবস্থায় সেই পেজ থেকেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায় না।
এরকমই একটি ভুঁইফোড় অনলাইন শপ “পদ্মার ইলিশ”। যাদের অনলাইন প্রতারণার শিকার চট্টগ্রামের মোর্শেদ। তিনি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। গত ১২ আগস্ট ২০২৪ তারিখে মেসেঞ্জারে “পদ্মার ইলিশ” নামে একটা আইডি থেকে আমাকে ইলিশ মাছের একটা প্রাইজ লিস্ট সেন্ড করে। আমি মাছের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলে যে, শুধু ডেলিভারি চার্জ ও বরফ বাবদ ৩৫০/-টাকা অগ্রিম দিতে হবে। বাকি টাকা পণ্য রিসিভ করার সময় পেমেন্ট করতে হবে। তারা আমাকে ০১৯৪৭-৩০৩৯৪৮ নম্বরে বিকাশ/ নগদ-এ টাকা পাঠাতে বলে। আমি ৩৫০/- অগ্রিম বিকাশে পাঠাই। পরের দিন সন্ধ্যায় তাদেরকে মেসেঞ্জারে যোগযোগ করি এবং বলি যে, আমার পণ্য পাইনি। তখন তারা বলে আপনার লোকেশন টা দূরে তো তাই পার্সেলটা পৌঁছাতে পারেনি আগামী কাল পেয়ে যাবেন ১০০%।
আমি আমার এক ফ্রেন্ডের জন্য অর্ডার করেছিলাম যে কিনা কক্সবাজারে আছেন। ১৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখ আমার ফ্রেন্ড সকালে ফোন করে বলে যে, তাকে পার্সেল এর ব্যাপারে ফোন করেছে এবং বলেছে যে, আগে ১৮৯৯/-টাকা বিকাশে পেইড করতে হবে তারপর তার পণ্য ডেলিভারি দেবে। তখন সে তাদের বিকাশ নম্বর ০১৩২২-২১২৯৯৮-তে টাকা পাঠায়। তারপর তারা আবার ফোন করে আমার ফ্রেন্ডকে বলে যে, আপনি শুধু পার্সেলের টাকা দিয়েছেন কিন্তু কোন খরচ দেন নাই। তাই আবার ১৯৩৪/-টাকা পাঠান। তারপর আমি আপনার আগের পাঠানো ১৮৯৯/-টাকা আবার ফেরত দেব। এরপর সে আবার ১৯৩৪/- টাকা উল্লেখিত বিকাশ নম্বরে পাঠায়। তারপর তারা আবার বলে যে, আমাদের একাউন্টটা লক হয়ে গেছে আপনি (১৮৯৯+১৯৩৪)=৩৮৩৩/-টাকা আবার পাঠালে লক খুলে যাবে। তখন আমার ফ্রেন্ড বিরক্ত হয়ে ওদেরকে বলে যে, আপনারা একবার এক কথা বলছেন আমি আর টাকা পাঠাতে পারব না আপনাদের যা খুশি করেন। তারপর সে বিষয়টি আমাকে জানায়। আমি যে নম্বরে অগ্রিম ৩৫০/-টাকা পাঠিয়েছিলাম (০১৯৪৭৩০৩৯৪৮) তাদের কল করে বিষয়টা যখন বলি তখন তারা বলল যে, ফাইজলামি পাইছে কিসের খরচ কিসের অতিরিক্ত টাকা আমি দেখছি, আপনি কোন চিন্তা করবেন না। আপনার পণ্য পেয়ে যাবেন, টাকাও পেয়ে যাবেন নিশ্চিত থাকেন। এরপর আমি ফ্রেন্ডকে ফোন করলে সে বলে যে পার্সেল পায়নি। আমি আবার তাদের নম্বরে ফোন করলে আর ফোন রিসিভ করেনি। মেসেঞ্জারও বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি আমাকে খুবই মর্মাহত করেছে। তাই এসব অসৎ লোকদের থেকে সবাই সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি। পোস্টটি সবাই বেশি বেশি করে শেয়ার করুন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ রইল আপনারা বিষয়টির প্রতি একটু গুরুত্ব দিলেই এদের ধরে আইনের আওতায় আনা সম্ভব।
ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে বেশি পরিচিত। যার জন্য প্রতারকরা ফেসবুকেই সবচেয়ে বেশি প্রতারণার জাল বিছিয়ে রাখে। জালিয়াতকারীরা “পদ্মার ইলিশ” নামের ফেইসবুক আইডি ব্যবহার করে প্রতারণা করে যাচ্ছে। বর্তমানে সাধারণ মানুষও রক্ষা পাচ্ছেন না অভিনব এই জালিয়াতির খপ্পর থেকে। এদেরকে ধরে আইনের আওতায় আনার জন্য ভূক্তভোগীরা জোর দাবী জানান।