নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং পাঠানটুলি কলাবাগান এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদা না পেয়ে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আদালতে মামলা দিয়ে সাংবাদিক পরিবারকে হয়রানি করছে আবুল বশর নামক এক ব্যক্তি। মামলার সাক্ষীরা জানেই না মামলার খবর। এমনটাই অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক শেখ সেলিম। শুধু মামলা দিয়েই নয়, বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে তার নির্মাণাধীন ভবনের কাজে ব্যাঘাত করারও অভিযোগ উঠেছে আবুল বশরের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী সেলিম জানান, প্রতি বছর ভারী বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় বসত ঘরে হাটু পরিমান পানি থাকে, এতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রতি বছর বর্ষায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সর্বশেষ গেল জুন মাসে দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে পুরনো বসত ঘর ভেংগে উঁচু করে বসত ঘর নির্মাণের কাজ ধরেন তিনি।
তার বড় ভাই আবুল বশর যিনি ২০ বছর পূর্বে পৈতৃক ভিটা বিক্রি করে উক্ত এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যান নির্মাণাধীন ভবনে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে নানান কৌশলে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাংবাদিক শেখ সেলিমের পরিবারের কাছে।
বিষয়টি শেখ সেলিমের পরিবার শেখ সেলিমকে অবগত করলে আবুল বশরকে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
এরই জের ধরে আবুল বশর শেখ সেলিম সহ তার পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন শেখ সেলিম ও তার পরিবার।
অনুসন্ধান করে জানা যায়, মামলার আরজি অনুযায়ী মামলায় দেয়া বাদি আবুল বশরের ঠিকানা ভুয়া, যদিও তিনি হালিশহর থাকেন কিন্তু মামলায় ঠিকানা দেয়া হয়েছে নজীর ভান্ডার লেইন। নজির ভান্ডার লেইনের স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আলম জানান উক্ত ঠিকানায় আবুল বশর নামের কোন ব্যক্তি থাকেন না। অন্যদিকে মামলায় যাদের স্বাক্ষী দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে মোঃ বাবুল ও মুরাদের সাথে কথা বলে জানা যায় এই ধরনের কোন মামলা বা ঘটনার কিছুই জানেন না তারা এবং মোঃ বাবুল (পিতা মরহুম ছালেহ্ আহমদ) আরো জানান বিগত ২০ বছরের মধ্যে আবুল বশরের সঙ্গে তার দেখা স্বাক্ষাতও হয়নি। অপরদিকে মামলার অন্য এক স্বাক্ষী মোঃ মুরাদ (পিতা মরহুম ইসকান্দর) জানান তাদের অজান্তেই তাদের স্বাক্ষী বানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পাঠানটুলি রোড নাজিরপুলে সরজমিনে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোঃ শেখ সেলিম ও তার পরিবারের সাথে আবুল বশরের কোন ধরনের ঝগড়া বিবাদ কিংবা মারপিট বা হুমকি ধামকির কোন ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া আবুল বশর এই নাজিরপুল এলাকাতে থাকে না। স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল নামের এক ব্যক্তির সাথে প্রতিবেদক পরিচয় গোপন রেখে এই বিরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আবুল বশর ২০ বছর আগে তার ভিটে বাড়ি বিক্রি করে নাজিরপুল এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। তারতো কোন অস্তিত্ব এখানে নেই। সে অন্য এলাকা থেকে এখানে এসে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। সাগির মিয়া নামের আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, সেলিম গং পৈতৃক সম্পত্তিতে ভবন নির্মাণ করছে, অন্য কারো সম্পত্তিতে নয়। তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে তাদের নিজ বসত বাড়িতে বসবাস করে আসছে। তাদের সাথে কারো বিরোধ নেই। অনেক বছর আগে আবুল বশর তার এক শতক জায়গা বিক্রি করে এলাকা ছেড়েছেন পরিবার নিয়ে, সে কোথায় থাকে তাও আমার জানা নেই।
মামলার বিষয়ে জানতে আবুল বশরের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি তার সম্পত্তি বিক্রি করে চলে যাওয়ার কথাও স্বীকার করে নেন। মামলায় মিথ্যা স্বাক্ষীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন মোবাইলে সব কথা বলা যায় না সরাসরি হলে বলতে পারবেন। এসময় প্রতিবেদক মামলায় উল্লেখিত ভুয়া ঠিকানা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেদকের সাথে উচ্চ স্বরে ক্ষিপ্ত হয়ে কথা বলে এবং তিনি বলেন আপনি আমাকে চিনেন? এক পর্যায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন বশর।