
বিগত সরকারের আমলে দেশে ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন বিদায় নিয়েছিল। সঠিক বিচার না পাওয়ায় মানুষ আদালতে না গিয়ে আল্লাহর কাছে বিচার দিত। সর্বস্তরের প্রশাসন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। আইনের রক্ষক পুলিশ মানুষের জানমালের ভক্ষকে পরিণত হয়েছিল। কারো কোন জবাবদিহিতা ছিল না, সবাই আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিল। জাতিকে ভাগ করে নানান বৈষম্য চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে এখন বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনে সবার আগে ইসলামী আদর্শের আলোকে সংবিধানকে ঢেলে সাজাতে হবে।
আজ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের মননশীল গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড পলিসি স্টাডিজ-CRPS এর উদ্যোগে সেন্টারের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. বি.এম মুফিজুর রহমান আল – আযহারীর সভাপতিত্বে আয়োজিত ‘বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনে নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এক সংলাপে বক্তাগণ উপরোক্ত মতামতগুলো ব্যক্ত করেন। চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ কমপ্লেক্স এর কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী ব্যাংকস সেন্ট্রাল শারীয়াহ সুপারভাইজারি বোর্ড বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রফেসর ড. গিয়াস উদ্দীন তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে ভাবনা পেশ করেন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন এর মহাসচিব এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-CBIU এর প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজ‘র চেয়ারম্যান লায়ন মো: মুজিবুর রহমান, তাহের গ্রুপ এর চেয়ারম্যান শিল্পোদ্যাক্তা জনাব শহীদুল্লাহ শাহজাহান, চট্টগ্রাম ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট এডভোকেট আবু তাহের, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্ট এর প্রফেসর ড. তানভীর মো: হায়দার আরিফ। সংলাপের শুরুতে নিবন্ধ পেশ করেন IIUC এর সহযোগী অধ্যাপক ও যায়তুন একাডেমী চট্টগ্রাম এর চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আমিনুল হক।
CRPS এর সেক্রেটারি রায়হান আজাদ ও সংলাপ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মিনহাজুল ইসলাম মাসুম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন IIUC এর প্রফেসর ড. একেএম শাহেদ, ইনভেস্টর্স ফোরাম চট্টগ্রাম‘র যুগ্ম আহ্বায়ক জনাব এম.এ কাদের, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স এসোসিয়েশন এর অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন, হিউম্যান রাইটস স্টুডেন্টস কাউন্সিল এর কনভেনর ফাতিমা যাহরা আহসান রাইসা, বিশিষ্ট সংগঠক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রবীণ সাংবাদিক ওসমান গনী সমাজকর্মী ও রোটারিয়ান মুবিনুল হক মুবিন, লেখক ও সোস্যাল একটিভিস্ট শাহ মুহাম্মদ নিয়ামত উল্লাহ, সমাজকর্মী ও সংগঠক অধ্যাপক নুরুল ইসলাম এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এ. এম. এম জাভীদ।
সংলাপে বক্তারা আরো বলেন, একটি রাষ্ট্রে নানান ধর্মের লোক থাকতে পারে। রাষ্ট্র কোন ধর্মের নয়, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। তবে ধর্মীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রত্যেকের শিক্ষা-সংস্কৃতি ঢেলে সাজাতে হবে। এ পৃথিবীতে প্রথম বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠন করেছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.। তিনি প্রথম রাষ্ট্রের ভূখন্ড নির্ধারণ করেন, আদমশুমারি প্রবর্তন করেন এবং মদীনা সনদের মাধ্যমে সকল ধর্মের লোক নিয়ে রাষ্ট্রীয় ঐক্য-সংহতি সৃষ্টি করেন। গত সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে জাতিকে বিভাজন করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে। শিক্ষার নামে প্রহসন শুরু করে। মাদকের সয়লাব ঘটিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়। সুতরাং দেশে শান্তি ও স্বাধীনতা বজায় রাখতে হলে দেশ পরিচালনার জন্য সৎ ও যোগ্য নাগরিক সৃষ্টি হয় এমন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। সংলাপ শেষে আলোচকগণ শহীদ ছাত্র-জনতার রুহের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।