কাস্টমসে দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ ব্যবসায়ীরা: সাইফুল আলম

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রাম বঞ্চিত ব্যাবসায়ী ফোরামের আহবায়ক ও বন্দর ইউজার এস এম সাইফুল আলম বলেছেন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে বেপরোয়া দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের শিল্প খাত, বিশেষত উৎপাদনমুখী শিল্প কারখানা। এ দুর্নীতির কারণে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে দুর্নীতি হচ্ছে নানা প্রক্রিয়ায়। এর একটি হল ডাটাবেজ পরীক্ষার নামে ইচ্ছামতো আমদানি পণ্যের উচ্চ শুল্ক আদায়। এ ক্ষেত্রে মানা হয় না কোনো নিয়মকানুন। যাচাই করা হয় না আমদানি পণ্যের বাজারমূল্য। শুল্কায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুর্নীতিকে জিইয়ে রাখার ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন আমদানিকারকরা। তাছাড়া কাস্টমস কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের গুরুত্ব দেয় না। কাস্টমসে দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ ব্যবসায়ীরা। কথায় কথায় লাইসেন্স বাতিল করায় ব্যবসায়ীদের সমস্যার সৃষ্টি হয়। দেশের প্রধান এই রাজস্ব কেন্দ্রের সাধারণ সিএন্ডএফ এজেন্টরাও চান দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত কাস্টমস। তাই চেম্বার ও কাস্টমস হাউসের সংস্কার প্রয়োজন। আমরা বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের পক্ষ থেকে ৩ হাজার সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের সমস্যা সমাধান করার জন্য কাজ করছি। আমরা ব্যবসায়ীদের দাবি নিয়ে সোচ্চার থাকবো, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করবো। বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরাম সাধারণ ব্যবসায়ীদের সেবক হিসেবে কাজ করবে

তিনি রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের মেম্বার হলে কাস্টমস হাউসে ব্যাবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ, সিএন্ডএফ লাইসেন্সিং বিধিমালার কালো আইন প্রত্যাহার এবং চট্টগ্রাম চেম্বারে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের সাথে বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা কোন ট্রেড বডির বিরুদ্ধে নয়। তবে যেখানে অনিয়ম হবে সেখানে বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরাম থাকবে। গত পাঁচই অক্টোবর অফিস সময়ের পরও চেম্বারে অবৈধ সাধারণ সদস্য নবায়ন করা হয়েছে। আগামী ৯ অক্টোবর বাণিজ্য সচিব চট্টগ্রাম আসবেন আমরা চেম্বারের ভুয়া ভোটের বিষয়ে তার কাছে আমাদের দাবি তুলে ধরব।

সিএন্ডএফ ব্যাবসায়ী সুলতানা ট্রেডার্সের চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন মাহমুদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সিএন্ডএফ ব্যাবসায়ী শওকত আলী।

এসময় ফোরামের সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কাস্টমসে বিদ্যমান শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালার সংশোধন ও সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। তবে সবার আগে প্রয়োজন দুর্নীতির মূলোৎপাটন। কেননা বিধিমালা সংশোধন করা হলেও দুর্নীতির সুবিধাভোগীদের অপতৎপরতা বন্ধ হবে না। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীরা নানা কৌশলে আমদানিকারদের হয়রানি করে। বস্তুত এই শুল্ক স্টেশনে পোস্টিং পেয়েই অনেকে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার নেশায় মেতে ওঠে। তিনি চট্টগ্রাম চেম্বার নির্বাচনের সময়সীমা ৯০ দিন বাড়ানোয় আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্রকৃত ব্যাবসায়ীদের ভোটার হওয়ার আহবান জানান।

সিএন্ডএফ ব্যাবসায়ী রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ করে সিএন্ডএফ লাইসেন্সিং বিধিমালা আইন প্রত্যাহার করতে হবে। চট্টগ্রাম চেম্বারে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সিএন্ডএফ ব্যাবসায়ী শওকত আলী বলেন, কাস্টমসে হয়রানির একটি ধরন হল পণ্য খালাসে বিলম্বসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে পণ্যভর্তি কনটেইনারের ওপর ডেমারেজ চার্জ আরোপ বা বৃদ্ধি। দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের স্বার্থে এ প্রবণতা বন্ধ হওয়া জরুরি। বন্দরে পণ্য খালাস কার্যক্রম সম্পন্ন হতে হবে সহজ ও যৌক্তিক শুল্কায়নের মধ্য দিয়ে এবং তা দ্রুততম সময়ে।

এতে বক্তব্য রাখেন সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য আবু সালেহ, জামাল উদ্দিন বাবলু, এডভোকেট ওমর ফারুক, বন্দর ট্রাক কাভার ভ্যান মালিক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোহেল, ফাল্গুনী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল খান, কাশেম গ্রুপের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, সিএন্ডএফ ব্যাবসায়ী জয়নাল আবেদীন জিয়া, হাজী বাদশা মিয়া, এনামুল হক চৌধুরী, এস এম ফরিদুল আলম, মো. মহসিন, শাহনেওয়াজ, আবু তাহের, নুরুদ্দিন সোহেল, আবুল হাসনাত, মো. স্বপন, সাইফুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম, আবুল কাশেম, লোকমান হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, জসীম উদ্দীন, গোলাম নবী, হারুনুর রশিদ প্রমূখ।

 

মন্তব্য করুন