বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ’র বিবৃতি

চট্টগ্রামবাসীর বহুল প্রত্যাশিত কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতু একনেকে পাস হওয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। এ প্রেক্ষাপটে একটি বিবৃতির মাধ্যমে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ, চট্টগ্রামের কিছু কথা তুলে ধরা হচ্ছে। বিবৃতি নিম্নরূপ –——-

বোয়ালখালী-পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের প্রাণের দাবি কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণে আশা জাগানিয়া একটি অগ্রগতি হয়েছে। জাতির সূর্যসন্তান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার দুই মাসের মধ্যে সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেয়ার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্খা বাস্তবে রূপ পেয়েছে।

অন্তঃত চার দশক আগে থেকে এ অঞ্চলের মানুষ কালুরঘাটে একটি নতুন সেতু নির্মাণের আকুতি জানিয়ে আসছে। ১৯৯১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে, প্রতিটি স্থানীয় নির্বাচনে কালুরঘাট সেতুর বিষয়টি প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিতে সেতুর বিষয়টি প্রাধান্য পেয়ে আসছে। ২০১৪ সালের শুরুতে দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের নিয়ে গঠন করা হয় ‘বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ, চট্টগ্রাম।’এর মধ্য দিয়েই সেতুর দাবি প্রথম জনসম্মুখে আসে এবং সেটি গণদাবিতে পরিণত হয়।

এরপর পরিষদের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি এবং সেতুসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নিবিড় যোগাযোগের মধ্য দিয়ে আজ আমরা এ প্রেক্ষাপটে পৌঁছেছি। আমাদের এ কর্মযজ্ঞে বিদ্যমান সময় পর্যন্ত আমরা সবসময় পাশে পেয়েছি গণমাধ্যমকে।

দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, সেতুর দাবিটি গণদাবি হলেও চার দশক ধরে সেটি বরাবর উপেক্ষার শিকার হয়েছে, আবার কখনও আলোর পথে গেলেও গতি ছিল খুবই মন্থর। অর্থায়নসহ নানা জটিলতায় বারবার আটকে থেকেছে প্রাণের দাবি, যে কারণে দশকের পর দশক ধরে অপেক্ষায় থেকে মানুষকে হতাশ হতে হয়েছে। কিন্তু দেশ-জাতির বহু আকাঙ্খিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার দুই মাসের মধ্যে যে গতিতে সেতুটি একনেকে অনুমোদন হল, তাতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, মাননীয় রেলপথ উপদেষ্টার প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। সরকারের নীতিনির্ধারকদের কর্মতৎপরতায় চট্টগ্রামবাসী আশার আলো দেখছে।

বিনয়ের সঙ্গে সরকার এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমাদের অনুরোধ, সেতু নির্মাণের কার্যক্রমের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় আর যেন অনাকাঙ্খিত কোনো বাধাবিঘ্ন, বিলম্ব সৃষ্টি না হয়, সেতু বাস্তবায়নের কার্যক্রমে সৃষ্ট প্রত্যাশিত গতি যেন বহাল থাকে, দরপত্রসহ আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই যেন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। বোয়ালখালী-পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে যে প্রাণসঞ্চার হয়েছে, মানুষ যেভাবে আশায় বুক বেঁধেছে, অনাকাঙ্খিত জটিলতা কিংবা কালক্ষেপণের কারণে সেটি যেন চরম হতাশায় পরিণত না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রেখে সজাগ থাকার জন্য আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা এবং রেলপথ উপদেষ্টা, উভয়ে চট্টগ্রামের সুযোগ্য সন্তান, সেতু নির্মাণের প্রাকপ্রক্রিয়ায় আমরা তাঁদের আন্তরিক নজরদারি প্রত্যাশা করছি।

মন্তব্য করুন