
বান্দরবান প্রতিনিধি: বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও লামা সরই ইউপি আলীগ নেতা মো: ইদ্রিস কোম্পানী। আলীগের ক্ষমতায় ১৫ বছরেরও বেশি সময় বান্দরবানের লামার সরই ইউনিয়নকে কাঁপিয়েছেন দাপটের সাথে।
অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ, ইটভাটা চুল্লির জন্য অবাধে বনজ সম্পদ ধবংস করে লাকরির যোগান দেয়া। ইটের মাটির জন্য পাহাড় কাটা, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, পাড়াবাসীদের উচ্ছেদ করে ভূমি দখল, ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে ভোট কেন্দ্র দখল করে ইউপি চেয়ারম্যান হওয়া ছাড়াও নানা অপকর্ম করে আজ শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি।
আলীগের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদকেও লামার সরই ইউনিয়নের টংগঝিরিতে প্রায় অর্ধশত ত্রিপুরা পরিবারকে উচ্ছেদ করে কয়েক কোটি টাকার বিনিময়ে পাড়ার শত একর জায়গা জোর পূর্বক দখলে দিতে চেয়েছিলেন।
বেনজীর আহমেদ পালিয়ে যাওয়ায় হঠাৎই তার আশা জলে ভেসে যায়। ফলে পাড়াবাসীদের জায়গাটি আর বেনজীর আহমেদকে দখলে দিতে পারেননি তিনি। এরই মধ্যে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর প্রায় দুমাস চুপ থাকার পর আলীগ নেতা ইদ্রিস কোম্পানী আবারও ফুঁসে উঠেছেন।
তার দাপট কমছে না কিছুতেই। বর্তমানে তার সাথে যোগ দিয়েছেন বান্দরবানের লামার সরই ইউপির স্থানীয় কিছু নেতা হালিম মেম্বার, আসাবুর, ফিরোজ, চোরাই কাঠ ব্যবসায়ী রফিক ও ইব্রাহিম প্রমুখ।
স্থানীয় ও ত্রিপুরা পাড়াবাসীরা জানায়, ইদ্রিস চেয়ারম্যান ও তার সহযোগি স্থানীয় নেতা হালিম মেম্বার, আসাবুর, ফিরোজ, চোরাই কাঠ ব্যবসায়ী রফিক ও ইব্রাহিমসহ বেশ কয়েকজনের প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকির কারণে যেকোন মূহূর্তে পাড়া ছাড়তে হবে এমন আতঙ্কে দিনরাত পার করছেন অবহেলিত ত্রিপুরা পরিবারগুলো।
প্রশাসনের ধারে ধারে ঘুরে এমনকি মানববন্ধন করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা তারা। অন্যদিকে কখনো সেনাবাহিনী, কখনো পুলিশ, আনচারসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়েও তাদের পাড়া ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে যেকোন মূহূর্তে বান্দরবানের পাহাড়ও উত্তাল হতে পারে। তাদের দাবী এখনই সরকার যেন আলীগের ক্ষমতাধরদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার।
এ বিষয়ে গণেশ ত্রিপুরা বলেন, আমরা এখানে প্রায় অর্ধশত পরিবার ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছি। কয়েকদিন আমাদের উচ্ছেদ করতে চেষ্টা করেছিল বেনজীর আহমেদ। এখন আবার নতুন করে আলীগ নেতা তার কিছু সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আমাদের উচ্ছেদ করতে চাইছে। আমরা এটি নিয়ে কয়েকবার মানববন্ধনও করেছি।
চন্দ্র মনি ত্রিপুরা এবং সত্য মনি ত্রিপুরাও জানালেন একই কথা। তাদের মতে প্রশাসন আলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে তারা আবার সক্রিয় ও একতাবদ্ধ হচ্ছে। এখনো সময় আছে, নয়তো তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
এসময় তারা ইদ্রিস চেয়ারম্যান ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবার দাবী জানান। প্রয়োজনে তারা ঢাকা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করারও হুশিয়ারী দেন।
এ বিষয়ে জানতে ইদ্রিস চেয়ারম্যানকে কল দিলে ব্যস্ততার অজুহাতে লাইন কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।