
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: সম্প্রতি মিথ্যা সংবাদের কারণে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন। একটি অনলাইন পোর্টাল, “পার্লামেন্ট প্রতিদিন”, একটি প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী কর্মকর্তার অজ্ঞাতসারে তার বক্তব্য হিসেবে ভুল তথ্য প্রচার করে, যা পরবর্তীতে তার পেশাগত জীবনে গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করে। এতে প্রাতিষ্ঠানিক অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরাগভাজন হয়ে পড়েন তিনি এবং তার চাকরি নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হন।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর, যখন “পার্লামেন্ট প্রতিদিন” নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সেকশন অফিসার মো. জাহাঙ্গীরের নাম উল্লেখ করে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পদোন্নতি নিয়ে ঘুষ বাণিজ্য চলছে এবং অর্থের বিনিময়ে বিশেষ কিছু লোকদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল: “চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ঘুষ বাণিজ্য!” সেখানে উল্লেখ করা হয় যে, শিক্ষা বোর্ডে “ফ্যাসিস্ট শাসন” চলছে, যেখানে কোনও নিয়ম বা আইন মানা হয় না। প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে, মো. জাহাঙ্গীর নাকি এই বক্তব্য দিয়েছেন এবং তিনি বোর্ডের নিয়ম ভেঙে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লোকজনকে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, মো. জাহাঙ্গীরের সাথে এই ধরনের কোনও আলোচনা হয়নি এবং তিনি এধরনের কোনও বক্তব্য দেননি।
ভুল তথ্য প্রচারিত হওয়ার পর থেকে মো. জাহাঙ্গীর তার প্রাতিষ্ঠানিক কর্তৃপক্ষ এবং সহকর্মীদের কাছ থেকে চাপের মুখে পড়েন। অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কঠোর সমালোচনার শিকার হন এবং তার চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় পড়েন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সন্দেহের কারণে তার পেশাগত পরিবেশ দিন দিন খারাপ হতে থাকে। এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তার ক্যারিয়ারের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সূত্র থেকে জানা যায় যে, “পার্লামেন্ট প্রতিদিন” প্রতিবেদনের সঙ্গে ভুক্তভোগী কর্মকর্তার কোনও সম্পর্ক নেই। এটি সরেজমিনে অনুসন্ধানের পর স্পষ্ট হয় যে, মো. জাহাঙ্গীরের নাম এবং বক্তব্য অজ্ঞাত কারণে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তার কোন পূর্বানুমতি ছাড়াই এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তা বলেন, “আমি জানি না কে বা কারা আমার নাম ব্যবহার করে এই ধরনের মিথ্যা প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং কোনও সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করা হয়নি। আমি মনে করি, হয়তো কোন অতি উৎসাহী ব্যাক্তি আমার নাম ব্যবহার করে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ অন্যায় এবং অগ্রহণযোগ্য।”
এ ঘটনার পর, মো. জাহাঙ্গীর মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রের সাথে আলোচনা না করেই এ ধরনের খবর প্রকাশ করা অসৎ সাংবাদিকতার উদাহরণ। এটি কোনভাবেই একটি দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার মানদণ্ডে পড়ে না।”
ভুক্তভোগী আরও জানান, তিনি এ ধরনের ভিত্তিহীন এবং ভুল সংবাদ পরিবেশনার কারণে মানসিকভাবে চাপে পড়েছেন। তিনি আশা করেন যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের সংবাদ পরিবেশনার আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষের অনুমতি এবং সত্য যাচাই করা হবে। অন্যথায়, এর ফলে নির্দোষ ব্যক্তিরা অনর্থক হয়রানির শিকার হবে, যা একটি সুস্থ সাংবাদিকতার জন্য হুমকি স্বরূপ।
এই ঘটনার পরে, মো. জাহাঙ্গীর প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের প্রতি একটি ন্যায়বিচারের অনুরোধ জানিয়েছেন এবং এই মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি চান, এ ধরনের ভিত্তিহীন সংবাদ যেন ভবিষ্যতে আর প্রকাশিত না হয় এবং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আরও দায়িত্বশীলতার সাথে তথ্য যাচাই করার আহ্বান জানান।