
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন পূর্ব নাসিরাবাদ সানমার ওশান সিটির বিপরীতে ওমর গনি প্লাজার হোটেল প্যারাডাইস (নিউ) আবাসিকের চতুর্থ তলার ছাদে মাসাজ পার্লার-এর নামে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। এ অবৈধ ব্যবসার নেতৃত্বে রয়েছেন নাজমুল বিন হোসাইন রাসেল ও তার সহযোগী ইমরান নামের দুই চিহ্নিত ব্যক্তি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, “বসুন্ধরা পার্লার” নামের এই কথিত মাসাজ পার্লারের দরজায় বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ভিতরে অবস্থান করছেন বেশ কয়েকজন নারী, অপেক্ষমাণ খদ্দেরদের জন্য। বাহ্যিকভাবে দেখে বোঝার উপায় নেই ভিতরে চলমান অনৈতিক কর্মকাণ্ডের। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে মুহূর্তের মধ্যে চম্পট দেয় রাসেল-ইমরান গং। তারা ছাদের অন্য পাশ দিয়ে পালিয়ে যায়, থেকে যায় ভিতরে আটকা পড়া ৭ থেকে ৮ জন নারী। ক্যামেরা দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই নারীরা।
সাংবাদিকদের সামনে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করে তারা জানান, রাসেল ও ইমরান তাদের আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করছে। তাদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারীও রয়েছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পালাতে চাইলে রাসেল-ইমরান তাদের উপর চালায় বর্বর নির্যাতন ও করেন অকথ্য গালাগাল। কেউ বের হতে চাইলে শারীরিক নিপীড়নও চালানো হয়।
নারীরা আরও জানান, রাসেল স্থানীয় রাজনীতির সাথে যুক্ত এবং তার ছত্রছায়ায় সন্ধ্যার পর অনেক প্রভাবশালী নেতা এখানে আনাগোনা করে। পুরো পার্লারটি রাসেলের ইশারায় পরিচালিত হয় এবং ইমরান মূলত খদ্দের সংগ্রহের কাজ করে থাকে। ঘটনাস্থলে পরে রাসেলপন্থীরা রাসেল সহ দলবল নিয়ে হাজির হয়ে সাংবাদিকদের হুমকি প্রদর্শন করে এবং বিভিন্ন সাংবাদিকের পরিচিত বলে দাবি করে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করে।
রাসেল দাবি করে, তার নাকি অনেক গণমাধ্যম কর্মীর সাথে গভীর সখ্যতা রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের নাকের ডগায় কীভাবে এ ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ড দিনের পর দিন চলে? চট্টগ্রামে স্পা সেন্টার আর মাসাজ পার্লারের আড়ালে ছড়িয়ে পড়েছে অশ্লীলতার বিষবৃক্ষ। তরুণ সমাজ নষ্ট হচ্ছে, সামাজিক অবক্ষয় চরমে পৌঁছাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান জানান, “আমি পুলিশ পাঠিয়েছি, বর্তমানে স্থানটি বন্ধ পাওয়া গেছে। এর আগেও কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে।”
সচেতন মহলের দাবি, প্রশাসনিক শক্ত হাতে হস্তক্ষেপ ছাড়া এই নোংরামি বন্ধ করা সম্ভব নয়। এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে তরুণ প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।