
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গা ধুমপাড়া আহম্মদ মিয়া মাতার ওয়াকফ্ এস্টেটের মসজিদের খতীবকে বের করে দিয়ে আ’লীগের দোসরেরা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর পাঁয়তারা করছে। মসজিদ পরিচালনায় দায়িত্বে থাকা এস্টেটের দায়িত্বরত সদস্যদের জোর পূর্বক বের করে দিয়ে মসজিদ পরিচালনা আওয়ামী দোসরদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসন করার জন্য কমিটির ক্ষমতা কুক্ষিগত করে মসজিদের নামে চাঁদাবাজী করে অর্থ আত্মসাৎ ও সম্পদ লুটপাট করতেছে বলে সূত্রে প্রকাশ। তাদের এমন অপতৎপরতায় মসজিদের সামগ্রিক উন্নয়ন কাজ ও পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে এবং এলাকায় ক্ষোভ ও অশান্তি বিরাজ করছে।
জানা যায়, আওয়ামী দস্যুরা ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পূর্বে ছাত্র জনতার আন্দোলনে আক্রমণ করে তার পাশাপাশি অত্র মসজিদের ভিতর মব সৃষ্টি করে। এস্টেটের দায়িত্বরত লোকদের কাছ থেকে মসজিদের আলমারির চবি জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন। তখন থেকে ওয়াকফ্ এস্টেটের নিয়োগ প্রাপ্ত মসজিদে দায়িত্বরত খতিব ও ইমাম সাহেবকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে আওয়ামী দোসররা। মসজিদকে তারা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক কাজের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করার পাঁয়তারা করছে। তারা এই মসজিদকে আওয়ামিলীগের নিরাপদ স্থান হিসাবে সংগঠনিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা করছে। কারণ এটি ওয়াকফ্ এস্টেটের মসজিদ। তাই এলাকার লোকজন অত্র মসজিদের ব্যাপারে সচেতন নয়। যা আওয়ামী দোসররা কাজে লাগাইতে চাই। এ ব্যাপারে একটি জিডি ও অভিযোগ করা আছে।
এই প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ ওয়াকফ্ প্রশাসন কার্যালয়ের অধীনে মেহের আফজল বেগম ওয়াকফ্ এস্টেট, ওয়াকফ করা সম্পত্তির পরিমাণ ১১. ৫১৭ একর। তৎমধ্যে সাড়ে ৪ গ-ার ভূমির উপর ১৯৬৪ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
অপপ্রচারকারী কারা, তাদের চরিত্র সবার কাছে স্পষ্ট। তাদের দ্বারা এযাবতকালে এলাকা কিংবা মসজিদের উন্নয়নের কোন রেকর্ড নেই। আল্লাহর দুশমনেরাই আল্লাহর ঘর মসজিদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে।
বাস্তব সত্য হলো, মসজিদের ওয়াকফ সম্পদ ও অর্থে লুলোপ দৃষ্টি পড়েছে আওয়ামী চক্রের এবং তারা জোট বেঁধে মসজিদ কমিটি দখল করতে চায়। সেই পরিকল্পনা মতে বর্তমান এস্টেট এর কমিটিকে বিতর্কিত করতে নানামুখি ষড়যন্ত্র আঁটছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ ওয়াকফ্ প্রশাসন কার্যালয়ের অধীনে মেহের আফজল বেগম ওয়াকফ্ এস্টেট চট্টগ্রাম ই.সি. নং- ১৯১৬৭, হাকিম ম্যানসন, ৮৭ স্ট্যান্ড রোড, ডবলমুরিং, চট্টগ্রাম। এর বর্তমান মোতাওয়াল্লী মোছাম্মৎ শাহজাহান বেগম এর মালিকানাধীন ও পরিচালনাধীন উত্তর পতেঙ্গা ধুমপাড়াস্থ আহাম্মদ মিয়া মাতার বায়তুর রহমত জামে মসজিদ এর নিয়োগপ্রাপ্ত খতিব ও ইমাম হিসাবে হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ আলমগীর দীর্ঘদিন যাবত দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। 
গত ২০২৫ সালের ২৯ অক্টোবর রাত্রে কাটগড় বাজার, ওসিএল ডিপোর সামনের বাড়ীর আবদুল খালেকের পুত্র মো: নুরুল আলম, মসজিদের দক্ষিণ পাশের বাড়ী ধুমপাড়ার মো: আবুল কাসেমের পুত্র সাজ্জাদ, মৃত ইউসুফের পুত্র আবুল কাশেম, বশির আহমদের পুত্র নুর উদ্দিন, মুসলিমাবাদ সীবীচ রোড আল আমিন সোসাটির মৃত নুরুল হকের পুত্র মো: আবদুল হাই সহ আরো কিছু চিহ্নিত ব্যাক্তিগণ মসজিদের সামনে একটি ঘরে খতীবকে ডেকে নিয়ে গিয়ে আগামী শুক্রবার জুমার নামাজ পড়াইতে জুমার দিন থেকে অত্র মসজিদে আসতেও নিষেধ করে দিয়েছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন আমার অপরাধ কি?
তারা বলেছেন, কোন অপরাধ নেই, আমরা নিষেধ করেছি আপনি আর আসবেন না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে আপনার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তখন খতীব বললেন, আমাকে নিয়োগ দিয়েছে ওয়াকফ্ এস্টেট মসজিদের মোতাওয়াল্লী ও অত্র মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব যারা আছেন তারা।
তিনি বলেছেন, আপনারা কে? আপনারা মসজিদ পরিচালনার কেউ না। খতীব বলেছেন, আমি অত্র মসজিদে কয়েক বছর যাবত দায়িত্ব পালন করে আসছি যদি আপনাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হতো তাহলে আমি জানতাম। পরে তাদের সাথে তর্ক না করে খতীব চলে যান। তার পরদিন মসজিদে মুসল্লীদের অবগত করলে মুসল্লীরা বলে ঐ দখলবাজ মানুষ গুলো এর আগেও মসজিদের ভিতর মুসল্লীদের মারধর করেছে। এ অবস্থায় মসজিদের আদব কায়দা, মুসল্লীদের নামাজের পরিবেশ রক্ষার্থে থানায় অভিযোগ দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য বলেন এলাকাবাসী।
এই দখলবাজরা বিগত আওয়ামী সরকারের পরিবর্তনের পূর্বে গত ২০২৪ সালে ২ আগষ্ট লোকজন নিয়ে মসজিদের ভিতর মব সৃষ্টি করে। পরে ওয়াকফ্ এস্টেটের নিযুক্ত মসজিদের দায়িত্বরত আলহাজ্ব ফরিদ আহম্মদকে গালাগালি করে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
তখন তারা আলমিরার চাবি নিয়ে এস্টেটের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র টাকা-পয়সা, সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক সহ সব কিছু নিয়ে যান। তার বিচার না হাওয়াতে ঐ দখলবাজরা বেপরোয়া হয়ে আইনকে তোয়াক্কা না করে আগামী শুক্রবার মসজিদে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ করার কথা বলে খতীবকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
মসজিদ হলো আল্লাহর ঘর, এখানে রাজনীতি বা দলীয় স্বার্থের কোনো স্থান নেই। যারা মসজিদের কমিটিতে যুক্ত হবেন, তাদের কোরান হাদিস জানা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কমিটিতে যুক্ত হবেন। তারা কেবল মসজিদ ও মুসল্লিদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন, অন্য কোনো স্বার্থ দেখবেন না।









