নিউজগার্ডেন ডেস্ক: ট্রাভেল এজেন্সীর মালিকদের আহুত মানববন্ধনে বক্তারা সম্প্রতি প্রণীত “ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ খসড়া আইন”-এর ওপর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন এতোদিন যাবৎ সুনির্দিষ্ট নিতিমালার আলোকে ট্রাভেল এজেন্সীর মালিকদের একক সংগঠন আটাব ও মন্ত্রাণালয়ের সমযোতার মাধ্যমে সুন্দর ভাবে ব্যাবসা চালিয়ে এসেছে আটাব সদস্যরা, কিন্তু হঠাৎ করে কালো আইন নামে খ্যাত অধ্যাদেশ ২০২৫ জারি করে ট্রাভেল এজেন্সী ব্যাবসা ও পর্যটন খাতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে মন্ত্রাণালয়, প্রস্তাবিত এই খসড়া আইনে কিছু ধারা রয়েছে যা দেশের ট্রাভেল ট্রেডের জন্য চরম ক্ষতিকর।
বিশেষ করে অফলাইন ট্রাভেল এজেন্সির জন্য ১০ লক্ষ টাকা জামানতের প্রস্তাব, এক এজেন্সির সাথে অন্য এজেন্সির ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা এবং জেল-জরিমানা বৃদ্ধির প্রস্তাব সবকিছুই অযৌক্তিক, অবাস্তব ও ব্যবসাবান্ধব নয়, বাংলাদেশের ট্রাভেল ও ট্যুরিজম খাত ইতিমধ্যেই কঠিন সময় অতিক্রম করছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন আইন দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার মতো ধারা প্রণয়ন করা হলে লাখো মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।
সরকার যদি এই খাতের উন্নয়ন চায়, তবে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া এমন আইন প্রণয়ন করা চলবে না। অফলাইন ট্রাভেল এজেন্সিদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা জামানতের প্রস্তাব বাতিল করতে হবে, কারণ এটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি এজেন্সিগুলোর টিকে থাকার পথ রুদ্ধ করবে। এক এজেন্সির সাথে অন্য এজেন্সির টিকেট ক্রয়-বিক্রয় বন্ধের বিধান বাতিল করতে হবে, কারণ এটি শিল্পের কার্যক্রম সীমিত করবে ও ব্যবসা বাণিজ্য নষ্ট করবে এবং ট্যুরিজমকে ক্ষতিগ্রস্হ করবে।
জেল ও জরিমানা বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহার করে পূর্বের বিধান বহাল রাখতে হবে, যাতে অপ্রয়োজনে হয়রানি ও প্রশাসনিক চাপ না বাড়ে। নিরপরাধ কেউ যেন শাস্তি ভোগ না করে তা নিশ্চিত করা। আটাব গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের নেতা বলেন, আমরা অতীতের সময়ে ট্রাভেল ট্রেডের উপর আরোপিত যেকোনো নেগেটিভ বিষয় দৃঢ়ভাবে আটাব সদস্যগণ প্রতিহত করেছি। আজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে যখন ট্রেডের এমন সংকটময় অবস্থা, যখন সরকারের সঙ্গে বার্গেনিং করার মতো শক্তিশালী কোন কমিটি না থাকার সুযোগে মন্ত্রাণালয় আটাব সদস্যদের উপর জুলুম করছে। 
ওয়ান স্টারের মালিক মোহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, প্রতিকার নয়, আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার চাই, স্বাধীনতার পর থেকে এই ট্রেড সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। হঠাৎ ১০ লক্ষ টাকার জামানত ও বিটিুবি ব্যবসা বন্ধ করার নীতিমালা আপনারা এককভাবে নিতে পারেন না। আটাব, হাব, টোয়াব এবং বায়রার প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, দুস্কৃতকারি কর্তৃক নির্বাচিত আটাব কমিটিকে বাতিল করে সংগঠনকে দুর্বল করার একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সিন্ডিকেট-চালিত নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এটি পুরো ট্রাভেল শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। দেশের ভ্রমণ ও পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখতে ব্যবসাবান্ধব ও ন্যায্য আইন প্রণয়ন করার দাবী জানিয়ে বক্তারা বলেন প্রয়োজনে আটাব, বায়রা, হাব ও টুয়াবের নেতৃবৃন্দে সাথে আলোচনার মাধ্যমে নিতিমালা সংশোধন করা যেতে পারে, তারা বলেন খসড়া আইনের বিতর্কিত ধারা সংশোধন করে একটি বাস্তবসম্মত, অংশগ্রহণমূলক নীতি প্রণয়নই এখন সময়ের দাবি।
আজ ২২ নভেম্বর, (শনিবার) বেলা ১১ টায় ট্রাভেলস্ এজেন্সীর মালিকবৃন্দে, চট্টগ্রাম এর উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আটাবের সাবেক ইভিপি এইচ, এম মুজিবুল হক শাকুর, বক্তব্য রাখেন মুহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া, আবু তাহের,শরিয়ত উল্ল্যা শহিদ, আজাহারুল ইসলাম চৌধুরী, আব্দুল খালেক, আবদুল মালেক, ওসমান গনী, এস এম মাসুদ, ওসমান গনী, আব্দুর রহমান, মোহাম্মদ রফিক, হেমায়েত উদ্দীন, গিয়াস উদ্দীন, মোহাম্মদ ইসমাইল, আবু তাহের, নাসির উদ্দীন, আবু বক্কর তালুকদার, আব্দুল মান্নান, এম এইচ মহিউদ্দীন, মাসুদ করিম, ফারুক আহমদ প্রমুখ চট্টগ্রামের প্রায় দুই শত এজেন্সীর মালিকগণ মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন।
বক্তারা বলেন আগামী ডিসেম্বর '২৫ বেশীরভাগ এজেন্সীর হালনাগাদ নবায়নের মেয়াদ শেষ হবে। নবায়নের জন্য জমাকৃত সকল এজেন্সীর হালনাগাদ নবায়নের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য তারা অবৈধ অনিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সী বন্ধে সরকার ও কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে জারিকৃত অধ্যাদেশ '২৫ বাতিল করা না হলে আন্দোলনের কর্মসুচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবেন বলে জানান।