ফ্যাসিবাদীরা দেশকে বিভক্ত করেছে: মাওলানা শাহজাহান

এবিএম ইমরান: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, স্বাধীনতার সঠিক চেতনা থেকে বিচ্যুত হয়ে ফ্যাসিবাদীরা বিকৃত চেতনা প্রচার করেছে এবং দেশের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। তারা গণতন্ত্র হত্যা করে নিজেদের স্বার্থে নৈরাজ্য চালিয়েছে, যা কখনও দেশপ্রেমিকের আচরণ হতে পারে না। শহীদ পরিবারের চোখের পানি কোনো দিন এ দেশে স্বৈরাচারকে পুনর্বাসিত হতে দেবে না।

৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে আয়োজিত জুলাই বিপ্লবের শহীদ স্মরণিকা ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতে ইসলামী আমীর ও কেন্দ্রীয় শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিপ্লবের ছয় মাস অতিক্রম হলেও খুনিরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”

নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নগর জামায়াতের নায়েবে আমীর নজরুল ইসলাম, ড. আ.জ.ম উবায়েদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ, এবং আমিরুজ্জামান। বক্তারা বলেন, শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

চট্টগ্রামের শহীদ পরিবারের সদস্যরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, “আমাদের প্রিয়জনদের হত্যা করে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তাদের কোনোভাবেই মানবো না। এই অন্যায়ের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা শান্ত হবো না।”

বিশেষ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকার মূল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান। তিনি একযোগে সকল বিভাগীয় শহরে এই গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। তার বক্তব্যে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ কখনও জুলুম ও অত্যাচারীদের শাসন মেনে নেবে না। শহীদদের আত্মত্যাগ দেশের প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে নতুন করে স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “দেশের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাধীনতার আদর্শের পরিপন্থী। সত্যিকারের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”

এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুধুমাত্র শহীদদের স্মরণ করা হয়নি, বরং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা পুনরুদ্ধারের জন্য একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে সকলকে ভূমিকা রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, যারা শহীদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তাদের ইতিহাস কখনো ক্ষমা করবে না। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং গণআন্দোলন জোরদার করতে হবে।

অনুষ্ঠান শেষে সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয় এবং উপস্থিত সকলকে স্বাধীনতার সঠিক চেতনা সমুন্নত রাখার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ করা হয়।

মন্তব্য করুন