
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বাফুফের কাছে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করার জন্য বিবৃতি প্রদান করেছেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, সদস্য মুস্তফা নঈম ও গোলাম মওলা মুরাদ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ জানান, এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নিকট ২৫ বছরের জন্য লিজ দেওয়ার সিদ্ধান্তে চট্টগ্রামের ক্রীড়ামোদী জনগণ হতবাক হয়েছে। এ স্টেডিয়ামের সঙ্গে চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের সম্পর্ক। ষ্টেডিয়াম বরাদ্দের ঘোষণার পর থেকে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ ক্ষোভে ফুসে ওঠেছে। ক্রীড়া সংগঠকদের সঙ্গে আলোচনা না করে ঐতিহ্যবাহী এ স্টেডিয়ামকে বরাদ্দ দেওয়া চট্টগ্রামবাসী কোনদিন মেনে নেবে না।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো জানান, দেশের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নগরী চট্টগ্রাম রাজধানী কেন্দ্রীক ঢাকার সব খেলাধূলা আয়োজন করে বিভিন্ন ফেডারেশন। কিন্তু বাকী ৬৭ জেলার মধ্যে খেলাধূলা আয়োজনের দিক থেকে সবার উপরে চট্টগ্রাম। সারা বছর প্রায় ৩২ টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। দেশের প্রথম টেস্ট জয়ের স্মৃতিময় মাঠ এটি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক প্রথমে ১০ বছর পরবর্তীতে ২৫ বছরের জন্য এম এ আজিজ স্টেডিয়াম মাঠকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নিকট লিজ দেয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত বাতিল দাবি করে চট্টগ্রামের ক্রীড়ামোদী জনগণের পক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও ক্রীড়া উপদেষ্টার নিকট সিজেকেএস সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে একটি পত্র প্রেরণ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক একটি সংশোধনী পত্র ইতোমধ্যে প্রেরণ করেছেন। যাতে চট্টগ্রামের সকল ক্রীড়া কর্মকা- পরিচালনার জন্য বাফুফের নিকট অনুমতি নেওয়ার কথা উল্লেখ করা আছে। যা কোনো ভাবেই চট্টগ্রামের ক্রীড়ামোদী জনগণ মেনে নিতে পারছে না।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জায়গায় চট্টগ্রামের বিত্তবান ক্রীড়া ব্যক্তিবর্গের নিজস্ব অর্থায়নে এই এম এ আজিজ স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছিল। সুতরাং এই মাঠ চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনেই থাকবে। অন্য কারোর তত্ত্বাবধানে থাকা সমচীন নয় বলে আমরা মনে করি। কেননা এই মাঠ থেকে অনেক খেলোয়াড় সৃষ্টি হয়েছে। এই মাঠ ছাড়া চট্টগ্রামে খেলাধূলা করার মত আর কোন মাঠ নেই। আর ঠিক মত খেলাধূলা হতে না পারলে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার আওতাভুক্ত ক্লাবগুলো হারাবে তাদের অস্তিত্ব। তাই যে কোন মূল্যে এই স্টেডিয়ামকে হাত ছাড়া করতে চায় না চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা। তাইতো আজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে একাট্টা হয়েছে চট্টগ্রামের মানুষ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো জানান, অবিলম্বে এ চুক্তি বাতিল করতে হবে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেন। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের চুক্তি বাতিল না করলে চট্টগ্রামবাসীকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত নয় এমন ব্যক্তিদের নিয়ে সিজেকেএসের যে এডহক কমিটি করা হয়েছে তা বাতিল করা হোক।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ জানান, এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে খেলাধুলা বন্ধ হলে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন খেলার খেলোয়াড়, কোচ, কোচিং স্টাফসহ প্রায় সাত হাজারের অধিক পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাফুফেকে মাঠটি বরাদ্দ দিলে ফুটবল ছাড়া অন্যান্য ৩০টি খেলার স্থানীয় টুর্নামেন্ট এবং এসব ইভেন্টের অনুশীলন কর্মকান্ডও বন্ধ হয়ে যাবে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো জানান, এম এ আজিজ স্টেডিয়ামটি বহুমাত্রিক ক্রীড়া কর্মকান্ডে ব্যবহার হয়ে আসছে। এ মাঠ থেকেই জাতীয় পর্যায়ের ফুটবলারসহ অন্যান্য খেলোয়াড় সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা না করে শুধুমাত্র একটি খেলাকে প্রাধান্য দিয়ে বাফুফেকে ২৫ বছরের জন্য স্টেডিয়ামটি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত চট্টগ্রামের জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।