মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই: ডা. শাহাদাত হোসেন

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: পীস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের ‘বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫ আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর কাতালগঞ্জ, পাঁচলাইশে অবস্থিত একটি মনোরম টার্ফে অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদত হোসাইন বলেন, শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা অপরিহার্য। এটি শুধু বিনোদন নয়, বরং নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা, আত্মবিশ্বাস ও পরিশ্রমের মানসিকতা গড়ে তোলে। বর্তমান যুগে শিক্ষার পাশাপাশি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চা সমান গুরুত্বপূর্ণ। ‘চট্টগ্রামে এখন সেভাবে মাঠে খেলার কোনো সুযোগ নেই। পীস স্কুলের বার্ষিক এমন উদ্যোগ শিশুদের সেই অভাবকে কিছুটা লাঘব করবে। তিনি আরো বলেন হেলদি সিটি ও হেলদি লাইফ গঠনে আমাদের কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’

‘কোয়ালিটি উইথ মুর‌্যালিটি’ স্লোগানে আয়োজিত ‘অ্যানুয়াল স্পোর্টস মিট’এ অংশ নেয় প্রতিষ্ঠানটির দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে অংশ নিয়ে মেতেছিল নিজেদের ক্রীড়ানৈপুণ্য দেখানোর উৎসবে। দিনটি ছিল শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আনন্দ উচ্ছ্বাসের উপলক্ষ।

জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন করা হয় এ চমৎকার আয়োজনের। বিভিন্ন রঙের বেলুন, ফেস্টুন, ব্যানার আর শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের পরনে নির্দিষ্ট ‘স্পোর্টস ড্রেসে’ টার্ফ প্রাঙ্গণ হয়ে ওঠে বর্ণিল ও জমজমাট। শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের সম্মানিত সচিব প্রফেসর ড. এ.কে.এম সামছু উদ্দিন আজাদ এবং আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ নাছির উদ্দীন। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন পীস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের চেয়ারম্যান মো: মাহফুজুর রহমান, এক্সেকিউটিভ সেক্রেটারি মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহ চৌধুরী, একাডেমিক হেড জনাব আখতার হোসেন এবং হেড অব স্কুল অধ্যক্ষ মুহাম্মেদ তোফায়েল আজমসহ অন্যরা।

এ সময় প্রফেসর ড. এ.কে.এম সামছু উদ্দিন আজাদ বলেন, ’অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এই দিনের জন্য অপেক্ষা করে। আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব প্রতিভাবান। পড়াশোনার ফাঁকে স্বল্প সময়েও তাঁরা ক্রীড়া–দক্ষতা অর্জনে মনোযোগী হয়। যা সত্যি প্রশংসনীয়।’

বিশেষ অথিতির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, ‘পীসের সাথে আমার সম্পর্ক অনেক আগ থেকেই। আমি এরকম ইসলামিক স্কুলের স্বপ্ন দেখি। এ ধরণের পদক্ষেপকে আমরা প্রমোট করি। তিনি আরো বলেন, ছাত্রছাত্রীদের এরকম আয়োজনে সম্পৃক্ত রাখতে পারলে তাদের মধ্যে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।’
এদিন মোট অর্ধশতাধিক ইভেন্টে অংশ নেয় পীস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ছিল ৬০ ও ১০০ মিটার দৌড়, মার্বেল দৌড়, বস্তা দৌড়, ঝুড়িতে বল সংগ্রহ, বল নিক্ষেপ ইত্যাদি। তিনটি (ইবনে সিনা, ইবনে খালদুন ও ইবনে তাইমিয়া) জোনে ভাগ করে গ্রুপভিত্তিক খেলা পরিচালিত হয়।

প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র শিক্ষিকা শেহরিন মাহমুদ এবং এরাবিক শিক্ষক মুরাদ হোসেনের ধারাভাষ্যে প্রতিযোগিতা–পর্ব হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। উৎসবের আমেজ ছিল অভিভাবক গ্যালারিতেও।

আয়োজনের সার্বিক দিক নিয়ে পীস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের সম্মানিত চেয়ারম্যান মো: মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘যেকোনো সফলতা অর্জনের জন্য দরকার সাহস ও সংকল্প। এ বার্তাটিকে সামনে রেখেই এবার পীস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। কারণ, খেলাধুলার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মনের প্রশান্তি না থাকলে পড়াশোনায় মন বসবে না। তাই মাঠকেন্দ্রিক খেলাধুলা যেমন ব্যক্তিগত অধ্যয়নে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে সহায়তা করে, ঠিক তেমনি মাত্রাতিরিক্ত গেজেট–আসক্তি থেকেও দূরে রাখে। ভবিষ্যতে স্পোর্টসকে কারিকুলামে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’
দুই শতাধিক শিক্ষার্থী তাদের প্রত্যাশার পদকের জন্য লড়াই করে। পুরো আয়োজন তদারকি করার পাশাপাশি বিজয়ীদের গলায় পদক পরিয়ে দেন স্কুলটির হেড অব এন.সি কাউসার রহমান, নুরুদ্দিন সাহেল, হেড অব এ.আই.এস ছমির উদ্দীন এবং জুনিয়র সেকশনের কো–অর্ডিনেটর তাহমিনা হাবিবসহ অন্যরা। দিনব্যাপী আয়োজিত প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন স্কুলটির শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মন্তব্য করুন