বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠান

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বক্তরা জানান, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন এবং একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের নির্মাণে তরুণদের ভূমিকা নিয়ে আপনাদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরা।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা একটি ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতিকে নতুন দিগন্তের দিকে এগিয়ে নিয়েছে। বৈষম্য, দমন-পীড়ন ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা এই আন্দোলনে তরুণ প্রজন্ম তাদের অসাধারণ সাহস ও নেতৃত্বের গুণাবলী প্রদর্শন করেছে। দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতী সরকার ক্ষমতায় এসেছে। বর্তমান সরকার এমন এক সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেছে যখন দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত, প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে এবং বিচারব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ।

তবে, নতুন স্বপ্ন ও আশার সঞ্চার হয়েছে এই পরিবর্তনের মাধ্যমে। দেশজুড়ে তরুণরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে যুক্ত হয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, লুটপাট হওয়া রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধার, বাজার নিয়ন্ত্রণ—এমন নানা উদ্যোগে তরুণদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ভবিষ্যতের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতারই প্রমাণ।

আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলা কমিটি ঘোষণা করেছে। এই কমিটিগুলোর মাধ্যমে তরুণদের নেতৃত্বে আমরা একটি ন্যায়ভিত্তিক, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনের প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, দেশের ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারণে তরুণদের সম্পৃক্ত না করলে আমরা কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে পারব না।

আমাদের দাবি ও পরিকল্পনা ১. গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য একটি ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সংবিধান পুনর্গঠন। ২. অর্থনীতি পুনর্গঠন ও লুণ্ঠিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধার। ৩. শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। ৪. বিচারব্যবস্থা ও প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা। ৫. তরুণদের রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা।

তরুণরা শুধু এই আন্দোলনের পথপ্রদর্শকই নয়, বরং তারা একটি নতুন, উন্নত ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। আমরা চাই সবাই মিলে এই পথচলায় সহযোগিতা করুক এবং বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে একটি আদর্শ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুক।

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের পাশে দাঁড়ানো। শিক্ষার্থীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে প্রচেষ্টা চালানো। দীর্ঘ ১৭ বছরের জুলুম, অন্যায়, অবিচারের ব্যাপারে জনগণকে সজাগ রাখা এবং ফ্যাসিবাদের মুলোৎপাটনে সামগ্রিকভাবে কাজ করে যাওয়া। অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকা। ছাত্র- জনতার যেকোনো যৌক্তিক দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে সংগ্রাম করা। যারা ফ্যাসিবাদী রাজনীতি পুনরায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে দৃশ্যমান নারীদের প্রতি সহিংসতামূলক আচরণের চট্টগ্রামে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার ব্যাপারে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ অবস্থান অব্যাহত থাকবে।

 

মন্তব্য করুন