
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ডাকাতি মামলার অভিযোগ না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ঘটনার পর বীর মুক্তিযোদ্ধ থানায় গিয়ে কয়েক দিন চেষ্টা করেও মামলা করতে পারেননি। এরপর তিনি বিষয়টি বিভিন্ন মহলে অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধ মোহাম্মদ মুছা কলিম উল্লাহ বলেন, এখনো পর্যন্ত থানায় মামলা নেননি। দুই/ তিনদিন ঘুরে আমরা এখন দিশেহারা। আমি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনে যুদ্ধ করা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশের একজন নাগরিক হই। আমি এবং আমার পরিবারের সকল সদস্যরা পেশাগত কারণে আমেরিকায় প্রবাসী হিসেবে বসবাস করি।
আমি দীর্ঘ ২৫ বছর আগে দক্ষিণ খুলশী, ব্লক- সি, লেন- ২. রোড নং-০১, বাড়ী নং- ৬৭/এ-৩, ঠিকানায় বাড়ীটি নির্মাণ করে পারিবারিক বসতভিটা হিসেবে বসবাস করে অসিছি। আমি প্রায়শই দেশ মাতৃকার টানে বাংলাদেশে ছুটে আসি এবং দেশে থাকাবস্থায় আমার উক্ত বসতভিটায় বসবাস করি। উক্ত বাড়টিতে আমি ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নিয়ে একখানা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছি এবং উক্ত মাদ্রাসাটিতে প্রায় ২৫০ জনের বেশী ছাত্র-ছাত্রী সুনামের সাথে ১ম-৫ম শ্রেণী পর্যন্ত আরবী ও বাংলায় পড়াশুনা করে থাকে।
ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ১৮ ফেব্রুয়ারী দুপুর আনুমানিক ১ টার দিকে আবুল খায়ের, তার স্ত্রী সুরমা আক্তার, বদিউল আলমের পুত্র মোঃ ফিরোজ একখানা সিএনজি যোগে আমার বাড়ীর গেইটের সামনে নামে এবং তাদের পিছনে দুইটি পিকআপ যোগে প্রায় ৪০/৫০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী আমার বাড়ীর গেইটে নামে। ঐ তিন জনের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন অজ্ঞাতনামা সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ীর গেইট ভেঙ্গে বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে। তারা আমার বাড়ীর মাদ্রাসায় অফিসের ও শ্রেণীকক্ষের দরজা ভাঙ্গতে গেলে মাদ্রাসার শিক্ষক ও কর্মচারীরা তাদের বাঁধা দিতে গেলে তারা তাদের মারধর করে অস্ত্রের মুখে আটকে রাখে। তখন আশেপাশের প্রতিবেশীদের নিকট থেকে আমি আমার বাড়ীতে ডাকাতদল প্রবেশ করে ভাংচুর ও ডাকাতি করছে মর্মে খবর শুনতে পাই।
খবর পেয়ে আমি স্থানীয় থানাকে অবহিত করি ও সেনাবাহিনীকেও ঘটনার বিষয়ে জানিয়ে সাহায্য চাই। এরই মধ্যে ঘটনার বিষয়ে অবহিত হয়েই আমি দ্রুত আমার বসতবাড়ীতে অর্থাৎ ঘটনাস্থলে চলে আসি এবং দেখতে পাই যে, তারা ও অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন সশস্ত্র ডাকাতের দল আমার বাড়ীঘরে নির্বিচারে ভাংচুর ও ডাকাতি করতেছে। এহেন সময়ে তাদের বাঁধা দিতে গেলে তারা আমাকে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি, চর, থাপ্পড় ও লাথি মারে।
আবুল খায়ের আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে ধরে। তার স্ত্রী সুরমা আক্তার, বদিউল আলমের পুত্র মোঃ ফিরোজ আমাকে মুখ ও গলায় কাপড় পেচিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। তারা আমাকে তাদের হাতে থাকা রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে।
আমার ঘরের দরজা জানালা ভেঙ্গে ঘরের আলমারীতে রক্ষিত ২০ ভরি স্বর্ণালংকার নগদ ৫ লক্ষ টাকা, দামী রোলেক্স ঘড়ি, যার মূল্য অনুমান ১,৫০,০০০/- টাকা আমার সাথে থাকা ৫টি দামী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল সেট, এছাড়া ঘরের মধ্যে থাকা প্রায় ৭ লক্ষ টাকা মূল্যমানের দামী জিনিসপত্র, মূল্যবান কাপড় চোপড়, দামী এন্টিক্স লুট করে নিয়ে নেয়। তাদের এলোপাতাড়ি ভাংচুরে আমার বাড়ীর আসবাবপত্র ও ইলেট্রিক জিনিস, টিভি, ফ্রিজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়, যার মূল্য অনুমান ছয় লক্ষ টাকা।
এছাড়া আসামীরা আমার ঘরের আলমারীর ড্রয়ারের মধ্যে সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস, আমার আমেরিকান পাসপোর্ট ও গ্রীনকার্ড, ব্যাংকের কার্ড ও চেকবই নিয়ে ফেলে। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী আসলে তারা লুটকৃত মালামালসহ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
তারা ঘটনাস্থল হতে পলায়নের আগে আমাকে আস্ত্র দেখিয়ে হুমকি ধমকি দিয়ে গালিগালাজপূর্বক বলে যে, যদি ঘটনার বিষয়ে আমি মুখ খুলি কিংবা কোনরূপ আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করি তবে আমাকে আসামীরা জানে মারিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলবে। ঘটনার আকস্মিকতায় ও তাদের এহেন অতর্কিত লুটপাট, ডাকাতি ও মারধরের শিকার হয়ে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি।
ঘটনার বিষয়ে সার্বিক বিবেচনা করে নিরাপত্তা ও জীবন বাঁচানোর জন্য দ্রুত তাদের গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।