নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রামে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেনের ভাই পরিচয়ে প্রতারণা, থানায় মামলা

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রামে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেনের ভাই পরিচয় দিয়ে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছেন শফিকুল ইসললাম। মানবাধিকারকর্মী এম. আবু আলমসহ কয়েকজনের কাছ থেকে বিদেশের ভিসা দেওয়ার শর্তে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন তিনি। প্রতারিত এম. আবু আলম, শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৬৩৭/২৪ (ডবলমুরিং)। ভুক্তভোগীদের ভয় দেখাতে ব্যবহার করছেন অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেনের ছবি।
প্রতারণার শিকার হওয়া বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এম. আবু আলম কর্তৃক চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, চট্টগ্রাম এ দায়ের করা মামলার আরজি থেকে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার মাধবপুর গ্রামের মৃত এনু মিয়া মোল্লার পুত্র শফিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম শহরের ডবলমুরিং থানার মোগলটুলী এলাকার হোটেল মাওলা আবাসিক এ অফিস খুলে আদম বেপারির কাজ করতেন।
শফিকুল ইসলামের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে এম. আবু আলমের পরিচয় হয়। পরিচয় সূত্রে শফিকুল ইসলাম, এম. আবু আলমকে আজার বাইজান যাওয়ার প্রস্তাব দিলে এম. আবু আলম প্রস্তাবে সম্মত হন। পাঁচ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকায় আজার বাইজান যাওয়ার জন্য কয়েক জনের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের সিদ্ধান্ত হয়। তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ভিসা প্রদানের পূর্বে এবং দুই লক্ষ টাকা আজার বাইজান যাওয়ার পর আবু আলম কর্তৃক পরিশোধের কথা হয়। এই সিদ্ধান্ত মোতাবেক এম. আবু আলম কয়েক দফায় শফিকুল ইসলামের বিকাশ একাউন্ট, ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট এবং সরাসরি নগদে তাকে তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করেন।
এরপর মো. কামাল উদ্দিন নামক এক ব্যক্তিকে শফিকুল ইসলাম ভিসা প্রদান করেছেন বলে এম. আবু আলম জানতে পারেন। তিনি সেই ভিসা সম্পর্কে হাটহাজারী ভিসা ব্যাংকে কামাল উদ্দিনসহ খোঁজ নিয়ে ভিসাটি জাল বলে তথ্য পান। এতে তিনি ২৩ মার্চ কামাল উদ্দিন সহ শফিকুল ইসলামের বাসায় গিয়ে মো. কামাল উদ্দিনকে জাল ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম এবং তার ভাই মো. শাহ আলমসহ আরো ৪/৫ জন মিলে মানবাধিকারকর্মী এম. আবু আলম এবং মো. কামাল উদ্দিনের উপর হামলা করেন। এম. আবু আলম এবং মো. কামাল উদ্দিনকে কিল, ঘুষি মারেন এবং লাঠি দিয়ে এলোপাথারি পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে বিতাড়িত করেন। এসময় এম. আবু আলমের ব্যবহৃত ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন। এতে এম. আবু আলম ২৩ মার্চ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

পরবর্তীতে এম. আবু আলম শফিকুল ইসলামের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি কোন টাকা নেন নাই বলে অস্বীকার করেন। এই অবস্থায় এম. আবু আলম শফিকুল ইসলামকে বারবার ফোন দিলে প্রশাসনের উচ্চপদে তার বড় ভাই আছেন এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে অবস্থা খারাপ হবে বলে জানান।

এ অবস্থায় এম. আবু আলম চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চট্টগ্রামে শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন। উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক এম. আবু আলম, মো. কামাল উদ্দিন, মো. দেলোয়ার, মো. ওয়াসিম, মো. জনি, মো. আলামিন, মনির হোসেনসহ আরো অনেক ব্যক্তির সাথে বিদেশ নেওয়ার শর্তে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে প্রতারিত মো. কামাল উদ্দিন জানান, উক্ত শফিকুল ইসলাম তার কাছ থেকে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে জাল ভিসা দিয়ে প্রতারণা করেছেন।
এদিকে প্রতারিত হওয়া বিভিন্ন ব্যক্তি আদম বেপারি শফিকুল ইসলামের কাছে টাকা ফেরত চাইলে শফিকুল ইসলাম তার ০১৭১৬-৪৪৯০১৭ মোবাইল নম্বর থেকে মানুষের কাছে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হাসানের ছবি প্রেরণ করেছে। মাহবুব হাসানকে তার বড় ভাই পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীদের ভীতি প্রদর্শন করছেন। এমতাবস্থায় আদম বেপারি শফিকুল ইসলামের হাতে প্রতারিত ব্যক্তিরা প্রশাসনের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। শফিকুল ইসলামের কাছ থেকে কষ্টার্জিত টাকা ফেরত পেতে মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে শফিকুল ইসলামের কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি সব তথ্য মিথ্যা এবং কোন টাকা পয়সাও নেননি বলে জানান।

মন্তব্য করুন