নিউজ ডেস্ক

হাসিনা ও তার সামরিক-বেসামরিক সাঙ্গপাঙ্গদের সৃষ্ট ‘আয়না ঘর’ এখন মানবতার হস্তারক সেল

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: হাসিনা ও তার সামরিক-বেসামরিক সাঙ্গপাঙ্গদের সৃষ্ট ‘আয়না ঘর’ এখন মানবতার হস্তারক সেল (Humanity Killings Cell) হিসাবে কুখ্যাতি পেয়েছে। আয়নাঘরে পরিচালিত নিষ্ঠুরতার বর্ণনা হিটলারের গ্যাস চেম্বার আর গেষ্টাপো বাহিনীর নির্মমতাকে হার মানিয়েছে।

ফ্যাসিবাদী হাসিনার পতন পরবর্তী সাময়িক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে দেশী-বিদেশী রাষ্ট্রঘাতি এজেন্টরা বিপ্লবের অর্জন নস্যাৎ করার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্রের জাল পেতে চলছে। কখনো সংখ্যালঘু, কখনো জুডিসিয়াল ক্যু, কখনো আনসার হট্টগোল, প্রতিবেশী ভারত কর্তৃক বিনা নোটিশে পানি ছেড়ে দিয়ে প্রলয়ংকারী বন্যা, কখনো উত্তর পাড়ায় গন্ডগোলের গুজব ছড়ানো, সর্বশেষ শিল্পাঞ্চালে বহিরাগতদের দিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ ও রপ্তানীমূখী কারখানায় ধবংসাত্বক কার্যকলাপ চালানোর মাধ্যমে তথাকথিত প্রতি বিপ্লবের দুঃস্বপ্ন দেখছে।

আমরা পেশাজীবীরা সুস্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্র্বতী সরকারের সঙ্গে শুধু বিপ্লবী ছাত্র সমাজ নয়, পুরো দেশ প্রেমিক জাতীয়তাবাদী শক্তি আর সর্বস্তরের জনগণ তাদের হৃদয় নিংড়ানো সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ, পতিত ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান কিংবা পূর্ণবাসনের যে কোনো উদ্ধত্য দেশবাসী প্রয়োজনে পূর্নবার মরণপন লড়াইয়ের মাধ্যমে পরাজিত করবেই।

জুলাই-আগস্টের মহাবিপ্লবের টর্নেডোতে ছত্রখান হয়েছে হাসিনার স্বৈরাচারের তাসের ঘর। কোমলমতি ছাত্র- ছাত্রীদের মরণঘাতি মরণাস্ত্রের সামনে নিরস্ত্র অবস্থায় বুক পেতে গৌরবময় মৃত্যু আলিঙ্গনের বীরত্বগাঁথা সমসমায়িক বিশ্ব ইতিহাস বিরল। এমন অমিততেজ সাহস আর দেশপ্রেম থেকে সংঘটিত বিপ্লব ১৯৭১ এর পর বাংলাদেশ ও তার মানুষের সামনে পুনরায় এনে দিয়েছে মুক্তির মহাসোপান। বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, ফ্যাসিবাদমুক্ত একটি মানবিক সমাজ ও রাষ্ট্র কায়েমের শহীদী স্বপ্ন বাকী মানুষের আকাঙ্খাকে জোরদার করেছে।

এই স্বপ্ন আকাঙ্খার আলোকে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, চট্টগ্রাম শাখা থেকে নিমোক্ত প্রস্তাবনাসমূহ জাতির সামনে হাজির করছি।
বিভিন্ন পেশার বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিত্ব ও বিদগ্ধজনদের সমন্বয়ে একটি ‘জাতীয় সংস্কার কমিশন’ গঠন করে তার সুপারিশনামার আলোকে সংবিধান, বিচার বিভাগ, প্রশাসন সহ সর্বস্তরে একটি মৌলিক সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ।
বিগত ১৫ বছর ধরে গুম, খুনে জড়িতদের এবং সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মানবতা বিরোধী গণহত্যার পরিকল্পনাকারী, আদেশদাতা ও হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা।
প্রশাসন, বিচার বিভাগ, সংবাদ মাধ্যম সহ রাষ্ট্র আর তার সহযোগী অর্গানসমূহে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদ কায়েম আর দুর্নীতির হোতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিগত দিনে জেল, জুলুম আর চাকুরিচ্যুতির কারণে অমানবিক পরিস্থিতি শিকার ব্যক্তিবর্গকে সসম্মানে পূনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণ প্রদান। কারণ আমরা মনে করি, গত ১৫ বছর ধরে হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী, দেশপ্রেমিক ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দল ও শক্তি সমূহের অবর্ণনীয় ত্যাগ ও সংগ্রামে সৃষ্ট পটভূমিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিচালিত কোটা সংস্কার থেকে ১ দফা আন্দোলনে শক্তি সঞ্চার আর অগণিত জনতার সমর্থন পেয়েছে। তাই পূর্বাপরের এ সম্পূরক লড়াইয়ের ত্যাগ স্বীকার যাঁরা করেছেন তাদেরও সমানভাবে মূল্যায়ন করা উচিত।

মন্তব্য করুন