
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বন্যপ্রাণীর অধিকার সুরক্ষা ও চট্টগ্রাম বন সংরক্ষক দুর্নীতিবাজ মোল্লা রেজাউল করিমের অপসারণ সহ ৬ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করেছেন পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সংগঠনের চেয়ারম্যান আ ন ম মোয়াজ্জেম হোসেন এ ছয় দফা দাবি উল্লেখ সহ বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও হত্যা বন্ধে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
তিনি জানান, জৈব নিরাপত্তার স্বার্থে ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করে গড়ে তোলা সারাদেশের চিড়িয়াখানা গুলো বন্ধ হলেও চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা এখনো বহাল তবিয়তে আছে। তাই ওই চিরিয়াখানার সকল বন্যপ্রাণী অবিলম্বে উদ্ধার করা উচিত।
এছাড়াও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পের নামে বিগত সরকারের সময়ে নানান অনিয়মের তদন্ত ও বিচার সহ নির্বিচারে হাতি ও অন্যান্য বন্য প্রাণী হত্যার বিচার করার দাবি জানান তিনি।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের বন সংরক্ষক বিতর্কিত মোল্লা রেজাউল করিমমের বদলি বাণিজ্য, লুটপাট, দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারি সহ সকল অপকর্ম তদন্ত করে অবিলম্বে তাকে অপসারণ করারও দাবি জানানো হয়। এছাড়াও প্রাণী কল্যাণ আইনের ১৮ ধারা সংশোধন করার দাবি তোলা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম, লায়ন হালিমা চৌধুরী, শরীফুল ইসলাম জুয়েল, নুরুল ইসলাম নুরু, মোঃ আলাউদ্দিন সহ আরো অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পের নামে বিগত সরকারের সময়ে নানান অনিয়মের তদন্ত পূর্বক বিচার ও নির্বিচারে হাতি সহ বন্যপ্রাণী হত্যার বিচার সহ ৬ দফা দাবী—
বদলি বাণিজ্য, লুটপাট, দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারি সহ অপকর্মে জড়িত বিতর্কিত চট্টগ্রামের বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিমকে অবিলম্বে অপসারণ করুন।
হাতি সুরক্ষার প্রকল্প বানিজ্যের আড়ালে গত দশ বছরে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি বান্দরবান ও শেরপুরে মোল্লা রেজাউল করিম, তপন কুমার দে এবং ইয়াসিন নেওয়াজ এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে নিহত শতাধিক হাতির পোষ্ট মর্টেম ও ফরেনসিক রিপোর্ট এবং প্রতিটি হত্যাকান্ডের মামলার সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করুন। হাতির করিডোর সহ সকল বন্যপ্রাণীর নিরাপদ অভয়ারণ্য নিশ্চিত করুন।
ভূমি, বন, পরিবেশ, শিল্প ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন করে দেওয়া কেপিজেড এর ভূমি বন্ধোবস্তী বাতিল করুন। আনোয়ারা কেপিজেড সংলগ্ন দেয়াঙ পাহাড়ের হাতি সহ সকল বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য নিশ্চিত করুন।
জৈব নিরাপত্তার স্বার্থে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা সহ দেশের সকল চিড়িয়াখানার বন্যপ্রাণী উদ্ধার করুন।
ডুলহাজারা সাফারি পার্কের মাস্টার প্লান লঙ্ঘন করে মনগড়া উন্নয়নের নামে লুটপাটের তদন্ত করুন। সাফারি পার্কে নিহত সকল বন্যপ্রাণীর পোষ্ট মর্টেম ও ফরেনসিক রিপোর্ট জন সম্মুখে প্রকাশ করুন এবং চুরি হওয়া সকল বন্যপ্রাণী উদ্ধার সহ অপকর্মে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সাফারি পার্কে হাতির পিটে পর্যটক বহন বন্ধ করুন।
প্রাণী কল্যাণ আইনের ১৮ ধারা সংশোধন করুন।
সেভ দ্য ন্যাচার অব বাংলাদেশ এর সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সেভ দ্য ন্যাচার অব বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের চেয়ারম্যান আ. ন. ম. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সেভ দ্য ন্যাচার অব বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
আমাদের মূল লক্ষ্য এদেশের প্রকৃতি পরিবেশ জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা। কিন্তু বিগত ১৭ বছর ধরে যারা এদেশের বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষার নামে প্রকল্প বাণিজ্য করে দেশের বন ও বন্যপ্রাণীদের হুমকিতে ফেলেছে জুলাই বিপ্লবের পরও একই চক্র দেশের বন ও বন্যপ্রাণীর অভিভাবক সেজে লুটতরাজ চালাচ্ছে যা একজন সুস্থ বিবেকবান মানুষ হিসেবে আমরা কখনো মেনে নিতে পারি না।
তাই শত শত প্রকল্প করে জনগণের টেক্সের হাজার কোটি টাকা যারা হাতিয়ে নিয়েছে তাদের মুখোশ উন্মোচন জরুরী বলে মনে করছি। তাই কোন দুর্নীতিবাজ লুটপাটের অংশীদারের সাথে আপোষ করব না বরং তাদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আমরা লড়ব।
বিগত সময়ে দেশের প্রতিটি বিভাগে দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় এদেশের অস্থিমজ্জা যারা কুরে কুরে খাচ্ছিল তাদের প্রেতাত্মা এখনো ঘাপটি মেরে আছে সরকারের প্রতিটি দপ্তরে। উপরোক্ত দাবী আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না।
তাই সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সিধান্তের আলোকে একই দাবীতে কর্মসূচী গ্রহণ করা হল। গণ সাক্ষর কর্মসূচী আগামী ২৪ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল।
বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন, চেয়ারম্যান বরাবর উপরোক্ত দুর্নীতি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবীতে ডাকযোগে সারাদেশ হতে পোষ্ট কার্ড প্রেরণ আগামী ৫ মে সোমবার।
বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় শীর্ষ দুর্নীতিবাজ চট্টগ্রামের বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিমকে অপসারণের দাবীতে চট্টগ্রাম নন্দনকানন কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ১৪ মে বুধবার।
ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী ১৭ মে শনিবার।
জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও পরিবেশ উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ২০ মে মঙ্গলবার।