রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে: শিরিন জাহান

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদের প্রতিবাদে আজ ৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে এর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে শিরিন জাহান জানান, গত ৭ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি তারিখে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে আমার বিরুদ্ধেমিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদের প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি আরো জানান, বিএনপি মহিলা দলে কোনো পদ-পদবি না থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন একজন নেত্রী হিসেবে প্রতিটি কর্মসূচিতে আমি বিপুল সংখ্যক কর্মী ও নেত্রীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতাম। মহানগর বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচি উপলক্ষে মহিলা দলের সভানেত্রী মনোয়ারা বেগম মনি প্রায়ই আমার কাছে কর্মী আনার অনুরোধ করতেন। আমি প্রতিটি মহিলা দলের কর্মসূচিতে নিজ খরচে প্রায় শতাধিক ও তারও বেশি নারী নিয়ে অংশগ্রহণ করতাম। এমনকি আমাকে পদ দেয়ার আশ^াসে উক্ত নেত্রী একটি ডায়মন্ডও উপহার নিয়েছেন। পাশাপাশি নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে খাবার বা আয়োজনের বিষয়েও আমাকে বলতেন এবং আমি সর্বদা তাঁর অনুরোধ পূরণের চেষ্টা করতাম।

তিনি জানান, ২০২৩ সালের ১০ মার্চ আমার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান চট্টগ্রাম লেডিস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, আবু সুফিয়ান সহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ দি কিং অব চিটাগং-এ মেয়ের ওয়ালিমা অনুষ্ঠানে একই নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এই উপস্থিতির মাধ্যমেই প্রমাণ হয় আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত এবং গ্রহণযোগ্য একজন সক্রিয়কর্মী।

শিরিন জাহান আরো জানান, দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে অনুরোধ- দীর্ঘদিনের আমার ত্যাগ, অবদান ও রাজনৈতিক ভূমিকা যথাযথ মূল্যায়ন করা হোক। আমি একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে সর্বদা দলের জন্য, নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আদর্শে কাজ করে গেছি। আমার একটাই আবেদন দলের ভেতরে ষড়যন্ত্রকারীদের অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দুঃসময়ে মাঠের একজন ত্যাগী কর্মীর যেন সুনাম নষ্ট না হয়।

শিরিন জাহান জানান, বর্তমানে আমার শ্বশুরবাড়ি বোয়ালখালী উপজেলায়। ১৯৮৭ সাল থেকে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হই, তখন আমি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ১৯৯১ সালে এসএসসি পাশের পর আমার বিয়ে হয়। পরবর্তীতে আমি ১৯৯৯ সালে এইচএসসি এবং ২০০২ সালে ডিগ্রি পাস করি। ২০০১ সালের চার দলীয় জোট সরকারের সময় আমি বিভিন্ন মহিলা সমাবেশ ও নির্বাচনী প্রচারণায় নেতৃত্ব দিই। যা প্রমাণ হিসেবে ওই সময় বোয়ালখালীর আমুচিয়া ইউনিয়নের বক্কর চেয়ারম্যান, করলডেঙ্গা ইউনিয়নের বাচা চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাই মান্নান চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় নেতারা আমার রাজনীতির সাক্ষ্য বহন করেন। এরপর আমি চট্টগ্রাম নগরে এসে বাকলিয়া এলাকায় বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হই।

শিরিন জাহান আরো জানান, আমার স্বামী নাজিম উদ্দিন ছিলেন বর্তমান মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। ২০১৬ সালে ১৯ রমজানে আমি বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি ইফতার মাহফিল আয়োজন করি। এ ঘটনায় পরদিন আমার স্বামীকে কুপিয়ে আহত করা হয়, যা নগর বিএনপির তৎকালীন সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর সহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ আমার বাসায় ও চট্টগ্রাম মেডিকেলে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ নিয়েছিলেন। ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে গত ১৬ বছর আমি নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। বাকলিয়া এলাকায় পুলিশি হয়রানি ও মিথ্যা মামলার কারণে নিজস্ব ফ্ল্যাটেও থাকতে পারিনি। দলের দুঃসময়ে অনেক নেতাকর্মীকে আশ্রয় ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছি।
তিনি জানান, ২০২২ সালের ৭ অক্টোবর মেয়ের আকদ অনুষ্ঠান হোটেল রেডিসন ব্লুর মোহনা হলে অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন, বর্তমান মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, আবু সুফিয়ান সহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

তিনি জানান, আমার বাবার নাম হাজী মরহুম খায়ের আহমেদ, যিনি পদুয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন। তিনি ওই ইউনিয়নের প্রথম শিক্ষিত ব্যক্তি হিসেবে স্থানীয়দের কাছে বেশ পরিচিত ছিলেন। আমার মাতা আলহাজ জাহানারা বেগম, ১৯৭০ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত টানা পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সাহেদা বেগম ভাসানী

মন্তব্য করুন