রাউজানের আওয়ামী নেতা এখন বিএনপি

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: ৭ নং রাউজান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য সৈয়দ হোসেন এখন বিএনপি। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তারাই এখন বিএনপির ‘নেতাকর্মী’ সেজে গেছেন। দাপট দেখাতে শুরু করেছেন নিজ নিজ এলাকায়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন দখল, চাঁদাবাজি আর অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন অনেকে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিরোধী দলটির নেতাকর্মীরা।

বিগত দিনে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছেন, তাল মিলিয়ে চলেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে। তারাই এখন বনে গেছেন বিএনপির দাপুটে হর্তাকর্তা। এসব হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারী নেতাদের সঙ্গে যোগ হয়েছেন নব্য বিএনপি নামধারী অনেকে। যারা কখনোই বিএনপিতে সম্পৃক্ত ছিলেন না, তারাই এখন নানা জায়গায় দখল-চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলছেন। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন। আবার হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারীরাই এখন বিএনপির তৃণমূলের ত্যাগীদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছেন।

এ পরিস্থিতিতে ‘অনুপ্রবেশকারী’ কথিত নেতাকর্মীর বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের হাইকমান্ড। পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় মাইকিং শুরু করা হয়েছে ‘দুর্বৃত্ত’ মোকাবিলায়। শুধু হাইব্রিড নেতাকর্মী নয়, দলের কোনো নেতাকর্মীও অপকর্মে সম্পৃক্ত হলে তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি নেতারা জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একটি স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে তারা লড়াই করেছেন। হত্যা, নির্যাতন, মামলা-হামলা আর জেলবন্দি জীবন পার করে ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনে গত সোমবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। আর এর পরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানের দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। যখন বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা বিজয় উৎসব নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন, পলাতক জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, তখনই শুরু হয় বিভিন্ন স্থানে দখল, অগ্নিসংযোগ, চাঁদাবাজি ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা। এতে পুরো আন্দোলনে তাদের সফলতা, বিজয় অনেকটা ম্লান হতে থাকে।

ধ্বংস, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা বাদ দিয়ে ভালোবাসা ও শান্তির সমাজ গড়ে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসার নির্দেশনা দেন।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানে দখল ও লুটপাটের নানা খবর আসতে থাকে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, বাসাবাড়ি দখল, লুটপাট, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাসাবাড়িতে হামলা, সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলাসহ বিভিন্ন স্থানে গণডাকাতির খবর ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজয়ের যে আনন্দ, তা অনেকটাই ম্লান হতে থাকে। তারা শঙ্কিত হতে থাকেন নিরাপত্তা নিয়ে।

জেলা ছাত্রদলের একজন নেতা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তারা ১৭ বছর ধরে জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে এখন একটু স্বস্তি পেয়েছেন। অথচ গুটিকয়েক নেতা যেভাবে অপকর্ম করছেন, তাতে জনগণের ভালোবাসা, আস্থা অনেক হ্রাস পেয়েছে এ কয়েক দিনে।

মন্তব্য করুন