এক নজরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

নুরুল ইসলাম রিপন: চট্টগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব ফরিদা খানম গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোঃ মতিউর রহমান জাফরিন ছিলেন একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, যিনি শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। মাতা, মিসেস রিজিয়া বেগম ছিলেন একজন গৃহিনী। ফরিদা খানম ঢাকা বোর্ড হতে ১৯৯২ সালে এস.এস.সি এবং ১৯৯৪ সালে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ হতে বিএসএস (সম্মান) এবং একই বিভাগ হতে এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ২৫তম ব্যাচের সদস্য ফরিদা খানম সহকারী কমিশনার হিসেবে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, রাজশাহীতে ২১ আগস্ট, ২০০৬ তারিখে যোগদান করেন। চাকরি জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি রংপুর, নারায়নগঞ্জ, নরসিংদী, শরীয়তপুর, টাঙ্গাইল, ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় কর্মরত ছিলেন। সহকারী কমিশনার হিসেবে তিনি যথাক্রমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, রংপুর ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নারায়নগঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে তিনি যথাক্রমে উপজেলা ভূমি অফিস, পলাশ, নরসিংদী , উপজেলা ভূমি অফিস, নরসিংদী সদর এবং উপজেলা ভূমি অফিস, শরীয়তপুর সদর এ দায়িত্ব পালন করেন।তিনি ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলা এবং নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সরকারের আইন, নীতি, কৌশল ও উন্নয়ন প্রকল্প মাঠ পর্যায়ে প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণের অভিজ্ঞতা লাভ করেন।

এছাড়াও তিনি প্রেষণে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এর উপপরিচালক ম্যাজিস্ট্রেট এবং বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন এর উপপ্রধান হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি ১৩ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে সরকারের উপসচিব হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হন (২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ তারিখ হতে জ্যেষ্ঠতা প্রাপ্ত)। ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সরকার তাকে চট্টগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পদায়ন করলে তিনি ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে চট্টগ্রাম জেলায় যোগদান করেন।

চট্টগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব ফরিদা খানম দূর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন, গতিশীল ও জনবান্ধব প্রশাসন গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।আগামী নতুন বছর চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, এমন বিশ্বাস পোষণ করছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। তিনি জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম শহরের সামগ্রিক উন্নয়ন, নাগরিক সেবা, এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি করতে সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে, চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, আর তাই এ অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়ন ও জনগণের সেবার মান নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফরিদা খানম বলেন, “আমরা ২০২৫ সালে চট্টগ্রামকে একটি আধুনিক, সুশৃঙ্খল ও উন্নত শহরে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প যেমন সড়ক, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং আইন-শৃঙ্খলা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই সকল পদক্ষেপ সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম হবে দেশের অন্যতম উন্নত শহর।” তিনি আরও জানান, জনগণের প্রতি সরকারের অঙ্গীকার হচ্ছে তাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রে সুবিধা প্রদান করা। জেলা প্রশাসক হিসেবে তার দায়িত্ব হচ্ছে, জনগণের প্রয়োজনীয় সেবা দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে পৌঁছে দেওয়া। এ জন্য প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার ও অন্যান্য সংস্থা একযোগে কাজ করছে। তিনি বলেন, “চট্টগ্রামে প্রতিটি নাগরিকের জন্য উন্নত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য আমরা নিবেদিত। আমাদের উদ্দেশ্য শুধু উন্নয়ন করা নয়, জনগণের সাথে সরাসরি যোগাযোগ ও তাদের সমস্যার সমাধান করা।”

এছাড়া, ফরিদা খানম জানান, প্রশাসন জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে এবং তাদের আস্থা অর্জন করতে সচেষ্ট থাকবে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি তিনি জনগণকে সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিবেশ রক্ষা, এবং সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উদ্বুদ্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, “জনগণের সহযোগিতা ছাড়া কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই সকলের সমর্থন ও সহযোগিতায় আমরা চট্টগ্রামকে একটি উন্নত, আধুনিক ও সবদিক থেকে কল্যাণমুখী শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।” ডিসি ফরিদা খানম দৃঢ় প্রত্যয়ে জানান, ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে সব ধরনের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে, যাতে চট্টগ্রাম শহরের জীবনযাত্রা আরও উন্নত হয় এবং এটি দেশের উন্নয়নের অগ্রভাগে স্থান পায়। “চট্টগ্রামবাসীর সুখ-সমৃদ্ধির জন্য আমরা একসাথে কাজ করতে চাই এবং ২০২৫ হবে চট্টগ্রামের জন্য নতুন সম্ভাবনার বছর।”

মন্তব্য করুন