নিউজগার্ডেন ডেস্ক: সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও গ্রেফতারের মিথ্যা ভিত্তিহীন সংবাদের প্রতিবাদে আজ ১১ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন মিলানায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফজলুল করিম চৌধুরী। তিনি জানান সম্প্রতি দেশের কয়েকটি অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছি মর্মে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সেই সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। প্রকাশিত সংবাদের প্রকৃত সত্য তুলে ধরতেই আমার আজকের এই সংবাদ সম্মেলন।
তিনি জানান, গত ৭ সেপ্টন্বর শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় আমি আমার ব্যক্তিগত গাড়ী নিয়ে হালিশহরস্থ বাসা থেকে আমাদের নেতা মোঃ আসলাম চৌধূরীর ফৌজদারহাটস্থ বাসভবনের উদ্দ্যেশ্যে যাওয়ার পথে হালিশহর ওয়াপদা গেইট এলাকার পোট কানেক্টিং সড়কে অনাকাংক্ষিত ভাবে একটি স্ক্র্যাপ ট্রাক নজরে আসে। স্ক্র্যাপ বহনকারী ট্রাকটির পিছনে আমার কার হালকা গতিতে চলছিল। আমি দেখতে পেলাম কিছু কিশোর সেই ট্রাকের উপর থেকে স্ক্র্যাপ সড়কে উপর চুরির উদ্দ্যেশে ফেলছিল। একটি লৌহার স্ক্র্যাপ আমার ব্যবহারিত গাড়ির সামনে এসে পড়লে আমার প্রাইভেট কার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তখন আমি গাড়ি থেকে নেমে স্ক্র্যাপের ট্রাক থেকে কিশোর চোরদের ধরে ফেলি এবং ট্রাকটির ড্রাইভারকে অনুরোধ করে বলেছি, সড়কের এক পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমি স্থানীয় দোকানদারদের সামনে ২ জন কিশোর চোর ও একজন তাদের সহকারী রিক্সচালককে চোরাই মালসহ ধরতে সক্ষম হই । তখন স্ক্র্যাপ বহনকারী ট্রাকের ড্রাইভারকে বলি, তার কোম্পানীকে অর্থাৎ স্ক্র্যাপের মালিককে কল দিতে। তখন ড্রাইভার আমাকে বলেন, এগুলো আবুল খায়ের স্টীলের স্ক্র্যাপ। আমি ড্রাইভারের কাছ থেকে আবুল খায়ের স্টীলের র্কমকর্তার হাসান’র মোবাইল নাম্বারে কল করে বিস্তারিত জানাই। তিনি আমাকে বলেন, আমি ফ্যাক্টরি থেকে লোক পাঠাচ্ছি।
লিখিত বক্তব্যে ফজলুল করিম চৌধুরী আরো বলেন, আমি প্রায় ২ ঘন্টার মত সময় অপেক্ষা করার পর পুনরায় আবার আবুল খায়ের স্টীলের কর্মকর্তা হাসানকে কল দিলে তিনি আসতেছে আসতেছে বলায় আমি রেগে বলেছিলাম, এই চোরদের কে কি আপনারা লালন পালন করছেন? তাদের উত্তর ঠিকমত না পেয়ে আমি আরো কঠোর ভাষা কথা বলে ফোনের লাইন কেটে দিই। এর কিছুক্ষণ পর একটি সেনাবাহিনীর গাড়ি এসে আমাকে ও আবুল খায়ের স্টীলের কর্মচারী জামালকে হালিশহর থানায় নিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। হালিশহর থানা পুলিশ কিছু না বুঝে আমাকে পুলিশ কাস্টুডিউতে রাখেন। সেই সময় কোন এক ব্যক্তি আমার হাজতখানার বন্দি অবস্থার ছবি ধারণ করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে সেই ছবি দেখে গণমাধ্যমে বিস্তারিত খোঁজ খবর না নিয়ে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করেছে।
ফজলুল করিম চৌধুরীর আরো জানান, সন্ধ্যা ৭ টার দিকে আবুল খায়ের স্টীলের এজিএম ইমরুলসহ কয়েকজন কর্মকর্তা হালিশহর থানায় এসে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তার কাছে সত্য ঘটনা তুলে ধরেন। তখন দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসার আবুল খায়ের স্টীলের কর্মকর্তাকে বলেন, এই বিষয়টি সেনাবাহিনীর টিম এর সাথে আলোচনা করতে। ইমরুল সাহেব সেনাবাহিনীর সাথে ঘটনার বিস্তারিত সত্য ঘটনা তুলে ধরলে দায়িত্বে থাকা সেনা কর্মমর্তা ও তার টিম হালিশহর থানায় এসে আমাকে মুক্ত করেন।
তিনি আরো জানান, মুক্ত হওয়ার পর ফেইসবুকে এর মাধ্যমে দেখতে পেলাম আমাকে চাঁদাবাজ সাজিয়ে সীতাকুন্ডের এক সাংবাদিক উদ্দ্যেশমূলকভাবে তার ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডিতে এ সংক্রান্ত ভিত্তিহীন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। মূলত এই কথিত আওয়ামী দালাল সাংবাদিক তার সাংবাদিকতার জীবনে কোন সময় সত্য ঘটনা প্রকাশ করেননি। তিনি পুলিশের একজন সোর্স এবং আওয়ামীলীগ এমপি, চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সংবাদগুলো পরিবেশন করতো আর দালালীতে নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন। আমি এবং আমার সংগঠনের নেতাকর্মীরা এই ন্যাক্কারজনক মিথ্যা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও এই ধরনের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবী জানাচ্ছি এবং আমার উপর ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনাটি আপনাদের মাধ্যমে প্রকাশ করার জন্য বিনিত অনুরোধ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, সীতাকুন্ড উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি ও আহ্বায়ক’র দায়িত্ব পালন করছি। দলের দুঃসময়ে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি মামলার আসামী হয়েছি এবং গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেছি। আমার প্রিয় নেতা আসলাম চৌধুরী গ্রেফতারের পর সীতাকুন্ডসহ জেলার দলীয় কর্মসূচী পালনের জন্য যুব সমাজকে নেতৃত্ব দিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো: জহুরুল আলম জহুর, মো: ইউসুফ নিজামী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো: মুরসালিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আওরঙ্গজেব মোস্তফা, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রোকন উদ্দিন, বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী মঞ্জুরুল ইসলাম, সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্ব্য়াক মো: শাহাব উদ্দিন রাজু, আলা উদ্দিন মনি, হেলাল উদ্দিন বাবর, পৌরসভা যুবদলের আহ্ব্য়াক অমলেন্দু কনক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো: কোরবান আলী সাহেদ, পৌরসভা ছাত্রদলের আহ্ব্য়াক মো: ইসমাইল হোসেন সিরাজী ও কামরুল ইসলাম বাবলু সহ উপজেলার অন্তর্গত প্রতিটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক প্রমূখ।