
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: আমার দেশের সম্পাদকীয় নীতি হলো সম্পূর্ণভাবে জনগণ ও বাংলাদেশের পক্ষে। আপনার এলাকায় জনগণের যে অভাব ও অভিযোগ, তাদের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে সংবাদ করতে হবে। ধরুন, আপনাদের এলাকায় কোনো এক জায়গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, যার ফলে জনগণ হুমকির মধ্যে আছে, সেখানে কোনো একটি বিশেষ দলের কারণে এই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আপনার দেখার দরকার নেই যে ওই বিশেষ দলটি কোন দল? আপনার পছন্দের না অপছেন্দর দল। আপনি যে দলের কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই দলের নাম উল্লেখ করে ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করে সংবাদ করতে হবে। তাহলে আপনার যে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা তা প্রমাণিত হবে।
আমার দেশ প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি বলেন, কোনো সংবাদ যেন অসম্পূর্ণ না হয়। আমরা কোনো খণ্ডিত সংবাদ ছাপবো না। অর্থাৎ একটি সংবাদ সচরাচর দু’টি বা তিনটি পক্ষ থাকে। যেমন ধরেন, এক এলাকায় মারামারির সংবাদ। এটা একটি সাধারণ সংবাদ। মারামারি দু’পক্ষ করে। সেখানে তৃতীয় পক্ষ হলো প্রশাসন। তাহলে তিন পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে সংবাদটি দিতে হবে। আপনি একপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে সংবাদ পাঠিয়ে দিলেন। মনে রাখবেন এ রকম সংবাদ হলে আমার মফস্বল প্রতিনিধি আছেন, তারা এরকম সংবাদ ছাপবেন না। যদি কোনো ভুলক্রমে সংবাদটি ছাপা হয়, তাহলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মনে রাখতে হবে, সব সংবাদে সব পক্ষের মতামত নিয়ে নিউজ পাঠাতে হবে। যে দলেরও হোক না কেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, আদিবাসী বলি না। আমি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বলতে পছন্দ করি। আপনারা (প্রতিনিধিরা) রাস্ট্রের সার্বভৌমত্বের কথা মাথায় রাখতে হবে। যখন আপনারা সংবাদ দেবেন, সেটা যেন কোনোভাবে রাস্ট্রের সার্বভৌমত্বের বিরোধী সংবাদ না হয়। এই ধরনের সংবাদ করার সময় মনযোগ সহকারে সংবাদ লিখে পাঠাতে হবে।
পত্রিকায় সংবাদ ছাপা বিষয়ে প্রতিনিধির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দু’ধরনের সংবাদ ছাপাই আমরা। একটা হলো ডে-ইভেন্ট। ডে ইভেন্টের আপনার করণীয় সম্পর্কে কিছু নেই। আপনার কাজ হলো ইভেন্ট বলা, সমানভাবে সব পক্ষের মতামত নিয়ে সংবাদ পাঠানো। আরেকটি সংবাদ হল অনুসন্ধানী। যেটার জন্য আলহামদুলিল্লাহ গত ১ মাস তিন দিনের মাথায় আমার দেশ এতো বেশি পরিমাণ আলোচিত হয়েছে, সেটা হচ্ছে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কারণে। এই চট্টগ্রাম থেকে অনেকগুলো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। যেমন, ইসকন ও রামগড় নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন গেছে। তার মধ্যে রামগড়ের সংবাদ অনেক বেশি পপুলার হয়েছে। আচার্য ব্যাপার যে, আমি নিজেই ভাবিনি যে এ নিউজটা নিয়ে এতো বেশি আলোচনা হবে। গভর্নমেন্ট রামগড় নিয়ে অ্যাকশন নিয়েছে। এগুলোই হলো অনুসন্ধানী সংবাদ।
তিনি বলেন, আপনাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, যারা আমাদের প্রতিনিধি থাকবে জেলা ও উপজেলায় ডে-ইভেন্টের পাশাপাশি কষ্ট করে অনুসন্ধানী সংবাদও পাঠাতে হবে। এখানে যদি আপনি মনে করেন যে, আপনার একার পক্ষে সংবাদটি করা সম্ভব হচ্ছে না, তাহলে অবশ্যই আপনারা মফস্বল সম্পাদককে বলতে পারেন। তিনি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে দরকার হলে ঢাকা থেকে আপনারদেরকে সাংবাদিক পাঠাতে হবে। আমাদের ইনভেস্টিগেশন টিম হেল্প করবে। বিষয়টি এখনও বলে দিলাম। তবে আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে আপনি কী বিষয়ে অনুসন্ধান করতে চান, সেই বিষয়ে মফস্বল প্রতিনিধিকে অবগত করতে হবে। এটা করার জন্য কোনো বাজেটের প্রয়োজন হলে সেটিও করা হবে।
তিনি বলেন, সাংবাদিকের জীবন খুব কঠিন। প্রতিদিন সংবাদপত্র আসে। প্রতিদিন পাঠক পড়ে এবং প্রতিদিন পরীক্ষায় পড়তে হয়। পৃথিবীর মধ্যে আমার ধারণা একমাত্র পেশা, যার মধ্যে প্রতিদিন পরীক্ষায় পড়তে হবে। সেজন্য এ সংবাদমাধ্যম হচ্ছে রাস্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।
আমার দেশ ব্যুরো প্রধান সোহাগ কুমার বিশ্বাসের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্যে রাখেন আমার দেশ নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ, ন্যাশনাল ডেস্ক ইনচার্জ আবু দারদা যোবায়ের, চট্টগ্রাম বিভাগীয় আঞ্চলিক প্রধান ও আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি।