
নিউজগার্ডেন ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে আগামী ৯ মে ২০২৫, চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিতব্য ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার এবং ১০ মে “তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ” নিয়ে সংবাদ সম্মেলন আজ ৮ মে (বৃহস্পতিবার) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আগামীকাল শুক্রবার ও তার পরদিন শনিবার এই চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির একটি অভিনব দুই দিন ব্যাপী কর্মসূচি তারুণ্যের সেমিনার ও সমাবেশ।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশনায়, বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে শরিক রাজনৈতিক দলগুলো ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে নীতি-প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী কর্মসূচি।
জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের যৌথ আয়োজনে দেশের চারটি বিভাগীয় কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ধারাবাহিক সেমিনার ও সমাবেশ। কর্মসূচির প্রতিটি আয়োজনেই গুরুত্ব পাবে বিষয়ভিত্তিক পলিসি ডায়লগ, যার মাঝে রয়েছে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অধিকারসহ নানা বিষয়ে তরুণদের ভাবনা।
এই কর্মসূচির প্রথম সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল ৯ মে, এই চট্টগ্রামে। ‘কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারটি বিকেল ৩টায় চট্টেশ্বরী রোডের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হবে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আলোচক হিসেবে অংশ নেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্লেষক ড: আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড: জামাল উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড: নাহরিন খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও এক্টিভিস্ট ডা: জাহেদ উর রহমান, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ, বিশ্বখ্যাত টেকনোলজি কোম্পানি ওরাকলের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার মুনতাসির মুনীর, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়েদ আব্দুল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্রের স্যানট্যান্ডার ব্যাংকের সিনিয়র ডাইরেক্টর শাফকাত রাব্বী, এবং বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ডিজিটাল প্লাটফর্ম পাঠাও-এর সিইও ফাহিম আহমেদ।
সেমিনারের পরদিন, অর্থাৎ ১০ মে শনিবার, চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজন করা হবে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’।
বৃহৎ এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এই সমাবেশ হবে তারুণ্যের এক মহামিলন। এখানে সমবেত হবেন দেশের নানা শ্রেণি-পেশা, বিশ্বাস, মতাদর্শ ও সামাজিক পটভূমি থেকে উঠে আসা তরুণ-তরুণীরা যারা স্বপ্ন দেখেন একটি আধুনিক, ন্যায্য ও মানবিক বাংলাদেশের। তাদের সঙ্গে থাকবেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মী ও সমর্থকবৃন্দ, যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই ঐতিহাসিক সমাবেশে তারা শুধু উপস্থিত থাকবেন না, বরং নিজেদের হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা আশা-আকাঙ্ক্ষা, অভিজ্ঞতা ও স্বপ্নগুলোকে প্রকাশ করবেন। একইসঙ্গে মনোযোগ দিয়ে শুনবেন বিএনপির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা, নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনা যা তাদের সেই স্বপ্নপূরণের সেতুবন্ধন হয়ে উঠতে পারে।
পরবর্তিতে ধারাবাহিকভাবে অনুরূপ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে খুলনা, বগুড়া ও ঢাকায়। এসব সেমিনার ও সমাবেশে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার তরুণ প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, চিন্তাবিদ, উদ্যোক্তা ও বক্তারা অংশ নেবেন। আলোচনায় উঠে আসবে তারুণ্যের ক্ষমতায়নে একটি আধুনিক, মানবিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ গঠনের রূপরেখা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান বিশ্বাস করেন, তরুণরাই দলের চালিকা শক্তি। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে তরুণদের সম্পৃক্ততার বিকল্প নেই। তাই তিনি তরুণদের নিয়ে এই আয়োজনের অভিনব পরিকল্পনা করেছেন। বিএনপি তারুণ্যনির্ভর দল হিসেবে সবসময় তরুণদের মূল্যায়ন করেছে। এই আয়োজন তারই বহিঃপ্রকাশ।
জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের সমন্বিত এই কর্মসূচিগুলোর মূল লক্ষ্য হলো, জনগণের ভাবনা ও প্রত্যাশার সমন্বয়ে দলীয় নীতি ও রূপরেখা আরও জনকল্যাণমুখী করে তোলা। আমরা জনগণের মতামত ও চিন্তা-ভাবনা সংগ্রহ করব, যার ভিত্তিতে আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক নীতিগুলোকে আরও জনকল্যাণমুখী ও মানুষের বাস্তব চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পরিমার্জন করতে পারব।
বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ, সম্পৃক্ততা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়াকে আরও জনমুখী ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ করে তুলতে চাই। এর মাধ্যমে আমরা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থা, এবং সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।
এসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, সিনিয়র সহ সভাপতি ইয়াছিন আলী, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুমসহ চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।