‘ধংসের পথে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যাবস্থা’

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট, চট্রগ্রাম এবং ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট মাদারীপুরের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে যা বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি রেটিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে এবং এতে সরকারি ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের ক্যাডেটদের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট চট্রগ্রামের ইন্সটাক্টর সীম্যানশিপ মেহেদী হাসান এবং ইন্সটাক্টর ইঞ্জিনিয়ারিং পাভেল এবং মাদারীপুরের প্রিন্সিপাল পলাশ আহমেদের বিরুদ্ধে নানারকম অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

পাভেল স্বৈরাচারের সহযোগী সাবেক নৌ সচিব মোস্তফা কামালের সহযোগিতায় যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট এর ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।এখন স্বৈরাচার বিরোধী এই সরকারের আমলেও থেমে নেই তার ক্ষমতার দ্বৈরথ। জনাব পাবেল সাহেব স্বৈরাচারের আমলের সচিবালয়ের পরিচিতি এবং প্রভাব খাটিয়ে যোগ্যতা না থাকা স্বত্তেও প্রমোশন পেয়ে চীপ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দ্বায়িত্ব পেতে যাচ্ছে বলে শুনা যাচ্ছে। জাহাজে ক্যাডেট ছাড়া অন্য কোন র‌্যাংক এ কাজ করার বাস্তব অভিজ্ঞতা যার নেই, সেই পাভেল নিয়োগ পেতে যাচ্ছে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট চট্রগ্রামের চীপ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। এইটা একদিকে যেমন বাংলাদেশের মেরিটাইম শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলে অন্যদিকে তেমন পতিত স্বৈরাচারের প্রভাব মুক্ত মেরিটাইম শিক্ষা ব্যাবস্থাকে বুড়ো আঙুল দেখানো হিসেবে বিবেচিত হয়।

উল্লেখ্য যে তিনি মেরিন একাডেমি থেকে প্রী সী ক্যাডেট কোর্স কমপ্লিট করে জাহাজে ১২ মাস ক্যাডেট হিসেবে চাকুরী করেন অত:পর ক্লাস থ্রী সিওসি পরিক্ষায় পাস করে।যার যোগ্যতা হিসেবে শুধু মাত্র ক্লাস থ্রি সার্টিফিকেট আছে।তার জাহাজের প্র্যাক্টিক্যাল নলেজ ক্যাডেটেই সীমাবদ্ধ অথচ বানিজ্যিক জাহাজের একজন ক্যাডেট ক্লাস থ্রি পাশ করার পর ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করতে পারে।এর পর এক্সপেরিয়েন্স এর মাধ্যমে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার এবং ক্লাস ২ যোগ্যতা সনদ দিয়ে সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার ও ক্লাস ১ যোগ্যতা সনদ দিয়ে চীপ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে জাহাজে নিয়োগ পেতে পারে(যার কোন যোগ্যতাই পাবেল এর নেই)।জাহাজের একজন সফল চীপ ইঞ্জিনিয়ারই পারে শিক্ষার্থীদের যথাযোগ্য মেরিটাইম শিক্ষা প্রদান করতে।সেই জায়গায় অযোগ্য এবং অদক্ষ একজন লোক যদি চীপ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ পায় একদিকে ক্যাডেটরা যেমন মান সম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে অদক্ষ নাবিক হবে, অন্যদিকে নিম্নমানের চীপ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগের কারণে আই, এম ওর কাছে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট এর মত হোয়াইট লিষ্টেট একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন প্রশ্নবিদ্ব হবে তেমন আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সেক্টরে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট থেকে পাশকৃত নাবিকদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে।

সিওসি প্রাপ্তির পর তিনি আর জাহাজে চাকুরী না করায় ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তার চাকুরির কোনো অভিজ্ঞতা নেই। ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকুরির অভিজ্ঞতা না থাকায় তার প্রশিক্ষক হওয়ার যোগ্যতাও নেই কিন্তু ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে তিনি সনামধন্য মেরিটাইম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।সাবেক নৌ সচিব মোস্তফা কামালের একই এলাকার (চাঁদপুর) লোক হওয়ায় তিনি এই বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত হন এবং ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করেন।অত্র প্রতিষ্ঠানের আরেক ইন্সটাক্টর মেহেদী হাসানকে নিয়ে নানামুখী অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান।
চট্রগ্রামের ২০০ জন প্রশিক্ষনার্থীকে বাজেট অনুযায়ী নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করে খাবারের টাকা থেকে মাসে ৪.৫ লক্ষ টাকা এবং মাদারীপুরের ১০০ জন প্রশিক্ষনার্থীর খাবারের টাকা থেকে ২.৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন বলে জানা যায়। চট্রগ্রামের ৪.৫ লাখ টাকা মেহেদি এবং পাভেল, মাদারীপুরের ২.৫ লাখ টাকা মাদারীপুরের প্রিন্সিপাল পলাশ বাগিয়ে নেন বলে জানা যায়।এছাড়া প্রশিক্ষনার্থী দের জামাকাপড় ও অন্যান্য ট্রেনিং সামগ্রী নিজ পছন্দের সাপ্লায়ারকে দিয়ে নিম্নমানের সাপ্লাই দিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করেন।

ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট চট্রগ্রামের ইন্সটাক্টর সীম্যানশিপ মেহেদী হাসান কে তার কুকীর্তির জন্য গত ১৫ই অক্টোবর সাময়িক বহিষ্কার করা হলেও গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে ফেসিস্ট সরকারের আমলে একতরফা দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার কুমির বনে যাওয়া এই ইন্সট্রাক্টর আবারও স্ব গৌরবে ফিরে আসবে বলে সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে।

মেহেদীর সাথে সব অপকর্মের সফল অংশীদার ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট চট্রগ্রামের ইন্সট্রাক্টর ইঞ্জিনিয়ারিং জনাব পাবেল চট্রগ্রামের অপকর্ম ছাড়াও এন,এম,আই মাদারীপুরে বিগত রমজানের পুরো মাসে ১০০ প্রশিক্ষণার্থীদের দিয়ে সারা রাত মাঠের জন্য মাটি কাটার কাজ করান, মেরিটাইম শিক্ষার বদলে মাদারীপুরের প্রশিক্ষনার্থী মাটি কাটা প্রশিক্ষণ দিয়ে নাবিকের বদলে মাটিকাটা শ্রমিক বানান।এই মাটি কাটা বাবদ বিশাল অংকের টাকা পাভেল এবং প্রিন্সিপাল পলাশ আহমেদ ভাগবাটোয়ারা করে নেন।

এই সব দূর্নীতিবাজ এবং অযোগ্য লোককে যদি স্থায়ীভাবে বহিষ্কার এর পরিবর্তে অযৌক্তিক প্রমোশনের মত পুরস্কার দেওয়া হয় ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট এর মত আন্তর্জাতিক মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যাবস্থা ধ্বংস হচ্ছে বলায় যায়।

মন্তব্য করুন