চট্টগ্রামের স্বর্ণের দোকান থেকে ১২ কোটি টাকা প্রতারক চক্রের পকেটে

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানাধিন আন্দরকিল্লা হাজারী গলির বিভিন্ন স্বর্ণের দোকান থেকে ৬০০ ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের ডেলিভারি দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন দোকান থেকে ১২ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে এক প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় প্রতারক চক্রের কয়েকজন সদস্যর বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা করা হয়েছে।

তবে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র সিন্ডিকেট করে কোটি কোটি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে স্বর্ণের ব্যবসা করে আসছে। অনেকে অবৈধভাবে ভারতে কোটি কোটি টাকা পাচার করে আসছে।

পুলিশ ও হাজারী গলির স্বর্ণ ব্যবসায়িরা জানান, বিভিন্ন স্বর্ণের দোকান থেকে ২২ ক্যারেট ৬০০ ভরি স্বর্ণ ডেলিভারি দেয়ার কথা বলে প্রতি ভরি স্বর্ণ ২ লাখ টাকা করে অর্ডার নেন প্রতারক চক্রের সদস্য বাঁশখালী উপজেলার বৈলগাও চৌধুরী বাড়ির বিদ্যুৎ চৌধুরীর পুত্র বিজয় চৌধুরী (৩০), কক্সবাজারের ঈদগাঁও বাজার কালি মন্দির মাদ্রাসা ভবন এলাকার যতীন্দ্র মোহন দেবের পুত্র মিলন কান্তি দেব (৬১) ও মিলন কান্তি দেবের পুত্র অর্নব দেব (২৭) সহ একটি প্রতারক চক্র গত ৯ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতারক চক্রটি অর্ডার নেন। অর্ডার নেয়ার পর ১২ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর হাজারী গলির স্বর্ণ ব্যবসায়ি বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া এলাকার বিপনী দাশের পুত্র বিজয় দাশ বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় প্রতারক চক্রটির বিরুদ্ধে মামলা করেন। তবে হাজারী গলির মাফিয়া স্বর্ণ ব্যবসায়ী কক্সবাজার জেলার টেকনাফ এলাকার পরিমল ধরের মাধ্যমে উক্ত অর্ডার পেয়েছে বলে দাবি করলেও প্রতারক চক্রটির সাথে পরিমল ধরের যোগসূত্র থাকার বিষয়টি সন্দহজনক বলে অনেক ব্যবসায়ীর অভিযোগ।

হাজারী গলির মাফিয়া স্বর্ণ ব্যবসায়ী পরিমল ধরের স্বর্ণের দোকান হাজির মার্কেটের ৩য় তলায় ঐশি বুলিয়নে লেনদেন হয় উক্ত দোকানের মালিক হচ্ছে পরিমল ধর। পরিমল ধরের দীর্ঘদিন ধরে হাজারী গলিতে ভ্যাট ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে সিন্ডিকেট করে শত শত কোটি টাকার স্বর্ণ ব্যবসা করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্বর্ণ ব্যবসায় যত ধরনের প্রতারণা এবং সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করার পেছনে পরিমল ধরের সিন্ডিকেট স্বক্রিয় বলে অভিযোগ রয়েছে। উক্ত মামলায় প্রতারক চক্রের সদস্য এাজাহার নামীয় আসামি বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া এলাকার মিলন কান্তি দেবের পুত্র অর্নব দেব, রাউজান উপজেলার চিকদাইর এলাকার জয়নাল আবেদিনের পুত্র আমিনুল করিম প্রকাশ জুয়েল (৩৯) গত ২৬ অক্টোবর পুলিশ গ্রেফতার করে।

১নং আসামি অর্নব দেব কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার হলে তার তথ্যর ভিত্তিতে প্রতারক চক্রের সদস্য আমিনুল করিম ওরফে জুয়েলকে গ্রেফতার করে পুলিশ তাদের কাছ থেকে ২৩ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।

মামলার প্রধান আসামি বিজয় চৌধুরী এক সময়ে পরিমল ধরের সহযোগি ব্যবসায় মত বিরোধ হওয়ায় এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। পরিমল ধর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্বর্নের দোকানের কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার লেন করে আসছে হাজারী গলির স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম সহ সভাপতি শাহজাহান ছিদ্দিকী লিটন বলেন, স্বর্ণের ব্যবসার আড়ালে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিগত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রীদের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত ছিল, অনেকে ভারতে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে চক্রটি, এখনো টাকা পাচারের ঘটনায় জড়িত, আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে বৈধ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে যত ধরনের সহযোগিতা আমরা করে যাবে, কোন অপরাধে অপারধ করে দেশ ও জাতির ক্ষতি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হউক এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার এস আই মিজানুর রহমান চৌধুরী, বলেন, স্বর্ণের দোকানে বিভিন্ন সময় একটি চক্র স্বর্ণ দেয়ার কথা বলে প্রায় ৫০/৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আসামি যারা গ্রেফতার হয়েছে তারা রিমান্ডে রয়েছে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে আদালতে প্রেরণ করা হবে, গ্রেফতারকৃত আসামিদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে।

 

মন্তব্য করুন