মা ও শিশু হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড পরিদর্শন করলেন মেয়র

নিউজগার্ডেন ডেস্ক: করোনা রোগীদের চিকিৎসায় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ৫০ শয্যার ডেডিকেটেড করোনা ওয়ার্ড পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। হাসপাতালের পুরাতন ভবনে এই ওয়ার্ডটি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ সেবা দিতে প্রস্তুত হবে বলে আশা করছে হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষ।

এর আগে মেয়র শাহাদাতের নেতৃত্বে এক সভার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালও করোনা রোগীদের সেবায় বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালুসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

মঙ্গলবার পরিদর্শনকালে মেয়র হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষকে এই উদ্যোগ নেয়ায় ধন্যবাদ জানান এবং সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। এরপর মেয়র মেডিকেল কলেজের ২০২৪-২০২৫ (২০ তম ব্যাচ) শিক্ষাবর্ষের এম.বি.বি.এস কোর্সের অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এস, এম, মোরশেদ হোসাইন, ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল। মান্নান রানা, ট্রাস্টি বোর্ডের ট্রেজারার অধ্যক্ষ লায়ন ড. মোঃ সান্না উল্লাহ, ট্রাস্টি বোর্ডের মেম্বার জনাব তারিকুল ইসলাম তানভীর, ইঞ্জিঃ মোঃ জাবেদ আবছার চৌধুরী এবং ডাঃ মোহাম্মদ সারোয়ার আলম। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কলেজের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এ.এস.এম. মোস্তাক আহমেদ, হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোঃ নূরুল হক এবং পরিচালক (মেডিকেল এ্যাফেয়ার্স) ডা. এ.কে.এম. আশরাফুল করিম।

অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ফেইজ-১ এর কো-অর্ডিনেটর (ভারপ্রাপ্ত) এবং বায়েকেমিষ্ট্রি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জেসমীন আবেদীন, ফেইজ-২ এর কো-অর্ডিনেটর এবং ফার্মাকোলজি ও থেরাপিউটিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. রোজিনা হক, ফেইজ-৩ এর কো-অর্ডিনেটর (নতুন কারিকুলাম) ও কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোঃ জালাল উদ্দিন এবং ফেইজ-৪ এর কো-অর্ডিনেটর এবং নাক, কান ও গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। অত্র মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ডা. অনুপম বড়ুয়া মেডিকেল কলেজের ইতিহাস, অবকাঠামো সুযোগ সুবিধা, শিক্ষার্থীদের পেশাগত পরীক্ষার ফলাফল, শিক্ষক/শিক্ষিকাদের পরিচিতি এবং ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের এম.বি.বি.এস কোর্স কারিকুলাম-২০২১ এর উপর সংক্ষিপ্তভাবে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানে বক্তব্য তুলে ধরেন। গ্রাজুয়েটদের মধ্যে থেকে পারফরমেন্স বিবেচনা করে “বেস্ট ডাক্তার” হিসাবে নির্বাচিত ডাঃ অরুনিমা বড়ুয়াকে “এস এন্ড এফ করিম ট্রাস্ট” এর পক্ষ থেকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন যে, বেসরকারী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোর মধ্যে এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটির কার্যক্রম শীর্ষে রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের আওয়তায় “চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ক্যান্সার হাসপাতাল এবং রিচার্স সেন্টার” রয়েছে, যা এক অনন্য উদ্যোগ।

কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে বিধায় সম্মিলিতভাবে স্বাস্থ্য সচেতনতার মাধ্যমে করোনার নতুন অ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের হার কমানো এবং প্রতিরোধের উপরেও তিনি গুরুত্বারোপ করেন। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে বাঁচতে সবার সচেতনতা প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করেন। আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার পাশাপাশি মানবিক চিকিৎসক হওয়ার জন্য তিনি ভর্তিকৃত নতুন শিক্ষার্থীদেরকে পরামর্শ প্রদান করেন।

বক্তারা বলেন যে, “চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল” সেবা খাতে বেসরকারি খাতের অংশ গ্রহণের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পর্যায়ক্রমে তিলে তিলে গড়ে উঠা জনহিতকর এই প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা সেবা, চিকিৎসা শিক্ষা এবং দক্ষ নার্স তৈরীর ক্ষেত্রে এতদঞ্চলের মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতীক। দেশে বিদেশে অত্র মেডিকেল কলেজের নাম ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। সফলতার ২০ বছর অতিক্রান্ত করছে-এই কলেজ। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য যাঁরা নিরলস ও নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে প্রয়াত হয়েছেন, তাঁদের কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করা হয়। বক্তারা আরও বলেন যে, মেডিকেল শিক্ষা একটি কঠিন বিষয়। কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে দিয়ে মেডিকেল শিক্ষার সময় অতিবাহিত করতে হয়। সাফল্যের স্বীকৃতিতে অভিষিক্ত চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ। শিক্ষকদের আস্থায়, দক্ষতায় ও বন্ধনের আলোকযাত্রায় মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে হবে-এই মনোভাবে অটল থাকতে হবে। অভিভাবকদের একটু সচেতনতা এবং শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতা থাকলে মেডিকেল শিক্ষা অর্জন সহজতর হয় বলে বক্তারা মতামত ব্যক্ত করেন। শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাকদের সমন্বয় ও আন্তরিকতায় মেডিকেল শিক্ষার ক্যারিয়ার উন্নত হয় বলে সভায় আলোচনা করা হয়।

অত্র মেডিকেল কলেজ এর বায়েকিমিস্ট্র বিভাগের প্রভাষক ডা. জেরিন তাসনিম এবং এনাটমি বিভাগের প্রভাষক ডা. মোঃ সাদ উল্লাহ চৌধুরীর প্রানবন্ধ উপস্থাপনায় উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ প্রতিষ্ঠানের প্রি-ক্লিনিক্যাল, প্যারা-ক্লিনিক্যাল এবং ক্লিনিক্যাল বিভাগ সমূহের অধ্যাপকসহ বিভাগীয় প্রধানবৃন্দ।

 

মন্তব্য করুন